মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ | ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

লাগামহীন বাজার, ঘাম ঝরছে ক্রেতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
৪ জুন ২০২১ ২২:১২ |আপডেট : ৫ জুন ২০২১ ১৭:২৭
সব ধরনের শাকসবজির দাম গড়ে ৫-১০ টাকা করে বেড়েছে। ছবি : সংগৃহীত
সব ধরনের শাকসবজির দাম গড়ে ৫-১০ টাকা করে বেড়েছে। ছবি : সংগৃহীত

বাজারে মাছ, মাংস থেকে শুরু করে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজসহ সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

আজ শুক্রবার রাজধানীর শুক্রাবাদ, কলাবাগান, গ্রিন রোডসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছ-মাংস, শাকসবজিসহ সবকিছুর দামই বাড়তি। ছুটির দিন হওয়ার সুবাদে স্থানীয় এসব বাজারে ক্রেতার উপস্থিতিও ছিল বেশি।

শুক্রাবাদ ও কলাবাগান মাছের বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ ৩৩০-৩৬০ টাকা, কাতল ৩০০-৩৩০ টাকা, পাঙাশ ১৯০-২২০ টাকা, পাবদা ৫৫০-৬০০ টাকা, ছোট তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা, বড় তেলাপিয়া ১৯০-২০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৭০-১৯০ টাকা, গ্রাস কার্প ১৫০-১৭০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৭০০-৭৫০ টাকা এবং শিং মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ১ কেজি বা ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা, কাচকি  ৩৫০ টাকা, মলা মাছ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রাবাদ বাজারের মাছ বিক্রেতা আফাজ উদ্দিন বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় বাজারে ক্রেতার ভিড় বেশি। তাই মাছের চাহিদা বেড়েছে। আড়ত থেকে বেশি দামে মাছ কিনতে হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।

এদিকে গরু, খাসির মাংস ও মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে ডিমের। গরুর মাংস ৫৫০-৬০০ টাকা, খাসি ৮০০-১০০০ টাকা, ব্রয়লার ১৩০-১৩৫ টাকা, লেয়ার ২২০-২৩০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির ডিম ৩২ টাকা হালি (পূর্বে ছিল ২৮-৩০ টাকা) ও হাঁসের ডিম ৪০ টাকা হালি (পূর্বে ছিল ৩৬-৩৮ টাকা) দরে বিক্রি হচ্ছে।

একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সব ধরনের শাকসবজির দামও। গোল আলু, টমেটো, গোল বেগুন, লম্বা বেগুন, করলা, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, গাজর, ফুলকপি, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, কচুর লতি, ঢেঁড়স, লাউশাক, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাকসহ সবধরনের শাক সবজির দাম বেড়েছে।

গত সপ্তাহে ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বেগুন আজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬৫ টাকায়, পেঁয়াজের ঝাঁজ মাঝে একটু কমলেও এখন আবার বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা। কাঁচামরিচ পূর্বে ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হলেও আজ হচ্ছে ৬০ টাকা, ১ কেজি রসুন কিনতে গুণতে হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা। পূর্বমূল্য ছিল ১২০ টাকা। গোল আলুর দাম হয়েছে ২৫ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ২০ টাকায়। এছাড়াও আদা ১০০-১২০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, লাউ ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা, গাজর (চায়না) ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এসব সবজি এক সপ্তাহ আগেও পাওয়া যেতো ৫-১০ টাকা কমে। এছাড়াও মুদি দোকানগুলোয় সয়াবিন তেল ১৪০-১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রাবাদ বাজারের মুদি দোকানি রফিকুল বলেন, ‘নতুন করে তেলের দাম আরও বেড়েছে। নতুন যেসব বোতল আসছে সেগুলোর দাম ১৫২ টাকা করে। পুরনো বোতল ১৪০-১৪৫ টাকা দরে বিক্রি করছি। তবে এখন পর্যন্ত চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। ২৫ কেজির ওজনের নাজির শাইল চালের বস্তা ১৬৫০-১৭০০ টাকা এবং মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০  টাকায় বিক্রি করছি।’

ক্রেতারা বলছেন, বর্তমান বাজারে সব কিছুর দাম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। এখন আবার নতুন করে বাজেট হয়েছে। বাজেটের প্রভাবে সামনে হয়তো অন্যান্য জিনিসের দাম আরও বাড়তে পারে।

কলাবাগান কাঁচাবাজারে আসা স্থানীয় একটি মেসের ম্যানেজার মো. সেলিম বলেন, ‘ঢাকায় আমরা যারা স্বল্প আয়ের মানুষ রয়েছি তাদের জীবন ধারণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। একটা মাছ কিনতে গেলে পাঁচ ছয়শ টাকা লাগে। শাকসবজির দাম বেশি, তেলের দাম বেশি, চালের দামও বেশি। আমরা আসলে যাব কোথায়?’



মন্তব্য করুন