পানির দরে পান!
এবার ভরা মৌসুমে বাজারে পানের দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা
পান চাষের জন্য প্রসিদ্ধ ঝিনাইদহ জেলা। তবে পানের দাম কমে যাওয়ায় চাষিদের মাথায় হাত উঠেছে। এ জেলার পানের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। এমনকি ঝিনাইদহের পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে। পান চাষে সফলতা পেয়ে এখানকার চাষিরা স্বাবলম্বী হয়েছেন। তবে এবার ভরা মৌসুমে বাজারে পানের দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। কম চাহিদা আর রপ্তানি প্রায় বন্ধ থাকায় ঝিনাইদহে পানির দরে বিক্রি হচ্ছে পান। দাম এতটাই কম যে উৎপাদন খরচও উঠছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। জেলা শহরের নতুন হাটখোলা, হলিধানী, ডাকবাংলা, হরিণাকুন্ডুর ভবানীপুর, আমতলা, জিন্দারের মোড়সহ বিভিন্ন হাটে খুবই কম দামে বিক্রি হচ্ছে পান।
হলিধানী হাটে গিয়ে দেখা যায়, ভালোমানের প্রতি পণ (৮০টি) পান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০ টাকায়। পাঁচ টাকা পণেও বিক্রি হচ্ছে কিছু পান। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এই বছর জেলার ছয় উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পানের চাষ হয়েছে।
শৈলকূপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের পানচাষি অশোক বিশ্বাস বলেন, এবার পানের যে দাম যাচ্ছে তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম। পানের দাম কম হওয়ার কারণে এবার উৎপাদন খরচও উঠছে না। কৃষক জিয়ারত আলী বলেন, এক বিঘা পান আবাদ করতে সার, খৈল, বিচুলি, পাটকাঠি, ওয়াসি, শ্রমিকসহ হিসাব করলে ৩ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। তবে বর্তমানে পানের যে দাম যাচ্ছে তাতে ভালোমানের পান হলেও ১ লাখ টাকার বেশি পাওয়া যাবে না।
হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভাদড়া গ্রামের পানচাষি আকবর আলী বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর পান বিক্রি কম হয়েছে। এখন বিক্রি হলেও দাম কম। এভাবে চলতে থাকলে পানের আবাদ বন্ধ করে অন্য আবাদ করা লাগবে। তিনি আরও বলেন, পানের ভালো দাম পেতে এখন সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। ভারত থেকে কিছু পান আসে, সেই পান আনা বন্ধ করতে হবে। আর বিদেশে পান রপ্তানি বাড়াতে হবে। শহরের নতুন হাটখোলা বাজারের পান ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, গত বছরের এই সময়ে যে পান ৭০ থেকে ৮০ টাকা পণ দরে বিক্রি হয়েছিল, সেই পান এখন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ১৫ থেকে ২০ টাকা পণের পান বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজগর আলী বলেন, দেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পান রপ্তানি করা হয়। করোনা শুরুর পর থেকে লকডাউনের কারণে পান রপ্তানি বন্ধ ছিল। এখন কিছু পাঠানো হচ্ছে। তবে পরিমাণে কম। আমরা চেষ্টা করছি পানের রপ্তানি বাড়ানোর।
মন্তব্য করুন