শেয়ারবাজারে বড় দরপতন আজও
প্রতীকী ছবি
প্রতিদিনই সূচক কমছে শেয়ারবাজারে। ঢাকার শেয়ারবাজারে গত ৭ কার্যদিবসের মধ্যে মাত্র এক দিন সূচক ৮ পয়েন্ট বাড়ে। এছাড়া বাকি ছয় কার্যদিবসে সূচক কমেছে ২৬৩ পয়েন্ট। আজ সোমবার চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৬ পয়েন্ট। কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
সূচকের টানা বড় পতনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। সেইসঙ্গে ধারাবাহিকভাবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। অক্টোবরের শুরু থেকেই শেয়ারবাজারে এই নেতিবাচক প্রবণতা বিরাজ করছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, গত ৩ অক্টোবর ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ছিল ৭ হাজার ৩৫৬ পয়েন্ট। আর লেনদেন ছিল প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। এর পর থেকেই মূলত পতনের মধ্যে পড়ে শেয়ারবাজার। টানা পতনের মধ্যে থাকায় এক মাসের মধ্যে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ৫৫৫ পয়েন্ট। আর দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে থাকা লেনদেন এক হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
সোমবারের বাজার চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। তবে বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় সূচকের পতন কম হয়। প্রথম আধাঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান সূচক কমে ৬ পয়েন্ট।
বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় এক পর্যায়ে সব খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়তে থাকে। ফলে প্রথম দুই ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার আগেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
কিন্তু লেনদেনের শেষ দুই ঘণ্টায় বাছবিচারহীনভাবে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হতে থাকে। ফলে দেখতে দেখতে বড় পতনে মধ্যে পড়ে শেয়ারবাজার।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৭৯৯ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ৬ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৫৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯৫টির। আর ২৬টি প্রতিষ্ঠানের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ডিএসইতে আজ লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৭৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের দিন (রোববার) লেনদেন হয় এক হাজার ১৪৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৭০ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৯২ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের ৬১ কোটি ৮৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ফার্মা, আইএফআইসি ব্যাংক, আলিফ মেনুফেকচারিং, বেক্সিমকো ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, লাফার্জ-হোলসিম বাংলাদেশ এবং মালেক স্পিনিং।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৯টির এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মন্তব্য করুন