শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়াকে কি স্লো পয়জনিং করা হয়েছে, প্রশ্ন বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৫ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৫৩ |আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২১ ০৮:১৬
বিএনপির  বিক্ষোভ সমাবেশ
বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কি স্লো পয়জনিং করা হয়েছে এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে একটা পরিত্যক্ত ভবন থেকে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। সেদিন কি খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিংয়ের কোনো ব্যবস্থা করা হয়েছিল? আমরা পরিষ্কার করে জানতে চাই।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, এদের পক্ষে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। যারা জোর করে আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে, কোনো ভোট না করে ক্ষমতায় বসে থাকতে পারে, ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে পারে, যারা অবলীলায় গণতন্ত্রকারী নেতা-কর্মীদের গুলি করে হত্যা করতে পারে এবং পঙ্গু করে দিতে পারে, অবলীলায় ইলিয়াস আলীসহ ৫০০ নেতা-কর্মীকে গুম করে দিতে পারে। তাদের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়।

পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, এ দিন সকাল ১০টায় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব। সঞ্চালনা করেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু।

এর আগে সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন।

ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী যিনি এ দেশে নারী ক্ষমতায়নের জন্য সবচেয়ে বড় কাজ করে গেছেন। তিনি বিনা বেতনে শিক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। তিনি এ দেশে বাক-স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল জনগণ কী চায় তা তিনি বুঝতে পারতেন। সে জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আওয়ামী লীগ নিয়ে এসেছিল, সেটা তিনি সংবিধানে সংযোজন করেছিলেন। কারণ বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, এখনে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া ‍খুব কঠিন। সে জন্য নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বচানের ব্যবস্থা সংযোজন করেছিলেন। এখন তারা বাতিল করেছে। আজ সেই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এক-এগারোতে যে চক্রান্ত শুরু হয়েছিল, সেই চক্রান্তের অংশ হিসেবে তাকে সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছিল। পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে একটা পরিত্যক্ত ভবনে, যেখানে ইঁদুর ঘোরাঘুরি করতো, স্যাঁতসেঁতে ঘরে প্রায় ২ বছর তাকে রাখা হয়েছিল। এরপরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, সেখানে তাকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।

 

আজ অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সেদিন কি খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিংয়ের কোনো ব্যবস্থা করা হয়েছিল? আমরা পরিষ্কার করে জানতে চাই। খালেদা জিয়া এত অসুস্থ, চিকিৎসকরা বলেছেন আমাদের সব বিদ্যা, সব জ্ঞান প্রায় শেষ। আমরা এখানে আর এর বেশি কিছু করতে পারবো না। তাকে অবিলম্বের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দরকার। শেখ হাসিনা শুনতে চান না। মন্ত্রীরাও বলে উচিত, আওয়ামী লীগের নেতারাও বলে মানবিক কারণে যেতে দেওয়া উচিত। দেশের মানুষ তো বলছেই সারাক্ষণ! তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এটা শুনতে চান না। তার প্রতিহিংসা, তার প্রতিশোধ। খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে শুধু নয়, জীবন থেকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এই চক্রান্ত করছেন বলেন ফখরুল।

সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, এক মুহূর্ত কাল বিলম্ব না করে অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় জনগণ আপনাদের বিচার করবে। জবাবদিহি করতে হবে, তখন আর কাউকে খুঁজে পাবেন না। পেছনের দরজাও খুঁজে পাবেন না।



মন্তব্য করুন