বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ : ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নিয়ে শঙ্কায় উপকূলবাসী

আলী মুক্তাদা হৃদয়, সাতক্ষীরা
৪ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:৫৫ |আপডেট : ৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১০:২৪
ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে জোয়ারে পানি বৃদ্ধির ফলে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে উপকূলবাসী
ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে জোয়ারে পানি বৃদ্ধির ফলে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে উপকূলবাসী

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে সাতক্ষীরার নদ-নদীতে জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ফুট বেশি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। হঠাৎ বৃষ্টিতে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। তবে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে জোয়ারে পানি বৃদ্ধির ফলে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে উপকূলবাসী। সবশেষ চলতি বছরের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে জোয়ারের পানির তোড়ে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ভেঙে বহু এলাকা প্লাবিত হয়।

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের তালতলা এলাকার বাসিন্দা মাসুদ হোসেন জানান, দুপুরের জোয়ারে কপোতাক্ষ নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি পানি ছিল। বর্তমানে অমাবস্যার গোন চলছে, স্বাভাবিক জোয়ারে এত পানি থাকার কথা নয়। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ নিয়ে আমাদের চিন্তা নেই। তবে জোয়ারের পানি বাড়লে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ভেঙে আমাদের এলাকা প্লাবিত হতে পারে।

সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনি এলাকার বাসিন্দা মো. আল হুদা ঢাকা ওয়েভকে জানান, গত দুই মাসের মধ্যে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) রাতের জোয়ারে খোলপেটুয়া নদীতে সবচেয়ে বেশি পানি উঠেছিল। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) অমাবস্যার গোন, রাতের জোয়ারে আরও বেশি পানি উঠতে পারে। এলাকার

দুর্গাবাটি, দাতিনাখালী, চুনা বেশির ভাগ এলাকায় বেড়িবাঁধগুলো দুর্বল। পানি বাড়লে এসব এলাকার বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।

সাতক্ষীরা দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চাঁদনিমুখা গ্রামের আশিকুর রহমান  জানান, শনিবার দুপুর থেকে থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা সংকেত না বাড়ায় এখন পর্যন্ত কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। লেবুবুনিয়া, পাশ্বেমারি, সোরা, দৃষ্টিনন্দন, পাতাখালী এলাকায় কয়েক কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ রয়েছে। জোয়ারে পানির চাপ বাড়লে বেড়িবাঁধ ভেঙে যেতে পারে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগ-১ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন  জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ইতোমধ্যে মেরামত করা হয়েছে। বর্তমানে জোয়ারে যে পরিমাণ পানি বাড়ছে তাতে এসব বেড়িবাঁধে ক্ষতির আশঙ্কা নেই। এরপরও সব এলাকায় খোঁজ রাখা হচ্ছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম প্রস্তুতির বিষয়ে গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম থাকায় এখনো বাড়তি কোনো প্রস্তুতি নেয়া হয়নি। উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত থাকতে বলেছে। সাইক্লোন শেল্টার, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকিং ও উদ্ধারকাজের জন্য প্রস্তুত।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারি ঢাকা ওয়েভকে বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনা খাবার মজুত রাখা হয়েছে। সতর্ক সংকেত বাড়লে উপজেলায় জরুরি সভা করা হবে।



মন্তব্য করুন