বড়দিনের ছুটিতে সপরিবারে বোস্টনে ঘুরলেন প্রতিমন্ত্রী পলক
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকালে পরিবারের সঙ্গে জুনাইদ আহমেদ পলক
যুক্তরাষ্ট্রের বড়দিনের ছুটিতে সপরিবারে বোস্টন ঘুরে গেলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কয়েক দফা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করলেও এবারই প্রথমবার তিনি ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন ও ক্যামব্রিজের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তিনি ঘুরে দেখেন।
পলক
জানান,
ঢাকা থেকে টরন্টো, টরন্টো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন, ওয়াশিংটন ডিসি ভ্রমণ করে দুবাই হয়ে দেশে ফেরেন তিনি। তিনি আরও জানান, তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না দেওয়ার মতো কোনও ঘটনাই ঘটেনি।
সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের কাছে তার ভ্রমণ সম্পর্কিত সব তথ্য রয়েছে। বরং তিনি তার কাজ শেষে পরিবার নিয়ে বিভিন্ন
দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করেন।
দেশে
ফিরে সোমবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় টরন্টো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন, ওয়াশিংটন ডিসি ভ্রমণের বিষয় নিয়ে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্টও
দিয়েছেন।
তাতে
তিনি লিখেছেন, ‘গত ২৫
ডিসেম্বর টরন্টো থেকে (টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ফ্লাইট নম্বর-এসি
৭৫১০) বোস্টনে গিয়ে প্রথমবারের মতো বোস্টন শহরটা ভিজিট করলাম। বোস্টনকে বলা হয়
পৃথিবীর অন্যতম সেরা শিক্ষানগরী। প্রায় ৭০টিরও বেশি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়
এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ ছাত্রছাত্রী যারা বিশ্বের আধুনিক জ্ঞান চর্চা করছে, গবেষণা করছে, উদ্ভাবন করছে।
আমি
আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ডিরেক্টর অফ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি সাউথ এশিয়া
ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক তরুন খান্না, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অফ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি সাউথ এশিয়া ইন্সটিটিউটের
হিতেশ হাথি, এবং মিনাকে যে ক্রিসমাসের ছুটি
এবং প্রচণ্ড ঠাণ্ডা থাকা সত্ত্বেও (-৪°) হার্ভার্ডে প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আমাদের বাংলাদেশের জ্ঞানভিত্তিক
অর্থনীতি গড়ার জন্য কিভাবে আমরা কাজ করতে পারি, নলেজ পার্টনার হিসেবে সে বিষয়ে আলোচনা করার জন্য এবং আমাকে হার্ভার্ডে দুপুরে
আপ্যায়ন করার জন্য।
এইবারই
প্রথম আমি বোস্টন থেকে (ডেল্টা ৫৭৯৮) ফ্লাইটে ওয়াশিংটন ভ্রমণ করলাম। যার
অভিজ্ঞতাও অত্যন্ত ভালো ছিল। ২৫ তারিখের টরন্টো থেকে রওনা হয়ে ২৬, ২৭ তারিখ বিশ্বের অন্যতম শিক্ষানগরী বোস্টন ভিজিট শেষে ২৮
ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে পৌঁছাই। ওয়াশিংটন এর আগেও আমি দুইবার গিয়েছি এবং
ওয়াশিংটনের হিস্ট্রি মিউজিয়াম, সায়েন্স
মিউজিয়াম, হোয়াইট হাউসসহ অনেক কিছুই পরিদর্শন
করেছি।
এবারের
বিশেষত্ব হচ্ছে যে, বাংলাদেশের
তিনজন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে নিযুক্ত কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে বৈঠক এবং আমার পরিবারের
সদস্যদের নিয়ে আমার দীর্ঘদিনের শখ ছিল তাদেরকে হোয়াইট হাউজ, লিংকন মেমোরিয়াল এবং ওয়াশিংটনের বিভিন্ন মেমোরিয়াল
দেখানোর।আর্ট অ্যান্ড টেকনোলজি মিউজিয়াম ছিলো মূল আকর্ষণ। এর সঙ্গে সায়েন্স
মিউজিয়াম, ওয়াশিংটন হিস্ট্রি মিউজিয়াম
দেখে আমার সন্তান অপূর্ব অর্জন এবং অনির্বাণ ভীষণ খুশি।
আমি আরও
ধন্যবাদ জানাই ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলামকে। এই তীব্র
শীতের মধ্যে এবং ছুটির মধ্যেও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আয়োজন করার জন্য।
ধন্যবাদ
জানাই বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং বর্তমানে বিশ্ব ব্যাংকে নিযুক্ত
আমাদের স্থায়ী প্রতিনিধি শফিউল আলম এবং বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের আরও দুইজন
নিযুক্ত কর্মকর্তাকে তাদের বৈঠক এবং রাতের আপ্যায়নের জন্য।
গত ২৫-২৮
(ডিসেম্বর) বোস্টন ও ওয়াশিংটন সফর শেষে ঢাকায় ফিরেছি। আশা করছি, হার্ভাড এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সঙ্গে আমরা এক সঙ্গে কাজ
করবো। ২০৪১ সালে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি, উদ্ভাবনী জাতি এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই সফরটি
সহযোগিতা করবে।
গত ১
(জানুয়ারি) তারিখ রাত ১০টায় বাংলাদেশে পৌঁছেছি।
পৌঁছানোর পরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ
থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোলনের স্বীকৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পরিদর্শন
এবং পরের দিন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য পোস্টটি দিতে দেরি হলো।’
এদিকে
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি
যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারেননি ও তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে গুজব ছড়ানো হয়। এ
বিষয়ে তিনি বললেন, ‘এর সবই গুজব। এসবের কোনও ভিত্তি নেই।’ পলক জানান, কানাডা ও
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ শেষে তিনি দেশে ফিরেছেন।
তিনি
বলেন,
‘সত্যের জয় সর্বত্র। মিথ্যার পরাজয় অনিবার্য। এই গুজব রটনার
মধ্যে দিয়ে এটা প্রমাণ হলো যে, ষড়যন্ত্রকারীরা
থেমে নেই। তারা রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়েই যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সকালে যে গুজব ছড়ানো হলো তা সন্ধ্যায় মিথ্যা বলে প্রমাণিত হলো। এগুলোকে আমরা কেস স্টাডি হিসেবে নিয়েছি। আমরা
ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করবো যেকোনও মূল্যে।’
মন্তব্য করুন