সিজারের সময় নবজাতকের কপাল কেটে ফেললো নার্স-আয়া
কপালে ৯টি সেলাই নিয়ে শিশুটি এখন গুরুতর অসুস্থ
ফরিদপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে গাইনি ডাক্তার ছাড়াই সিজার করতে গিয়ে নবজাতকের কপাল কেটে ফেলেছেন আয়া ও নার্স। কপালে ৯টি সেলাই নিয়ে শিশুটি এখন গুরুতর অসুস্থ।
এই ঘটনায় ক্লিনিকের মালিক মো. জাকারিয়া মোল্লা পলাশ ও আয়া চায়না বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে শহরের আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী রূপা বেগম রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ থানার উজানচর ইউনিয়নের মৈজদ্দিন মন্ডলপাড়া গ্রামের শফিক খানের স্ত্রী।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর ভাই মো. আমির ফয়সাল বলেন, শনিবার সকাল ৮টার দিকে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরীতে আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালে তার বোনকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু গাইনি ডাক্তার আসার আগেই তার বোন রুপা বেগমকে আয়া ও নার্স মিলে সিজার করে। বাচ্চা বের করে আনার পর দেখা যায় তার কপালে ৯টি সেলাই এবং বাচ্চাটি গুরুতর অসুস্থ।
তিনি বলেন, বিষয়টি তারা লুকানোর চেষ্টা করলেও প্রশাসনকে জানাই। পুলিশ এসে হাসপাতালের মালিক ও আয়াকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে শিশুটির ফুফা আসলাম খান বলেন, গরিব ও অসহায় মানুষের চিকিৎসার নামে এ ধরনের হয়রানি বন্ধ এবং অপরাধীদের শাস্তি চাই। রোগীদের চিকিৎসার নামে এ বেসরকারি হাসপাতালটি ডাক্তার, নার্স, আয়াসহ নানা অনিয়ম নিয়ে অনেকেরই অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুল আলম বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমি হাসপাতালটি পরিদর্শন করি। গাইনি ডাক্তার ছাড়াই গর্ভবতী মাকে সিজার করা এবং বাচ্চাটির কপাল কেটে ফেলার অভিযোগে হাসপাতালের মালিক পলাশ ও কর্মরত আয়া চায়নাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালটির বিভিন্ন অনিয়মসহ এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল মালিক সমিতির সভাপতি ডাক্তার আব্দুল জলিল বলেন, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। কেন ডাক্তার ছাড়া প্রসুতির ডেলিভারি করা হলো। সেটি জানার চেষ্টা চলছে। এই অন্যায় কাজের সঙ্গে যুক্ত দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব আমরা।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাতেমা করিম বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উদাসীনতা মেনে নেয়া হবে না। আমরা প্রসূতি মায়ের অপারেশন ও এই জাতীয় কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ডাটাবেজ তৈরি করছি এ ব্যাপারে মনিটরিং জোরদার করা হবে।
মন্তব্য করুন