বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফ্যাশন ডিজাইনার ও শিক্ষিকা নাহারীনের গল্প

সাভার প্রতিনিধি
২৪ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:২৩ |আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ০৪:০৩
ফ্যাশন ডিজাইনার ও শিক্ষিকা নাহারীন চৌধুরী
ফ্যাশন ডিজাইনার ও শিক্ষিকা নাহারীন চৌধুরী

নাহারীন চৌধুরী, একজন আত্মপ্রত্যয়ী নারীর নাম। তিনি বহুমাত্রিক পেশার ক্যারিয়ার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে। সারাদিনের কাজে কোনও ক্লান্তির ছাপ নেই। একজন মানুষ কী করে একই সময়ে ভিন্ন ভিন্ন পেশায় কাজ করতে পারেন তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নাহারীন। কর্পোরেট পেশায় যুক্ত থাকার সঙ্গে তিনি শিক্ষকতাও করছেন।

শান্তা মারিয়াম ইউনিভার্সিটি থেকে ফ্যাশন ডিজাইন থেকে স্বর্ণপদক পেয়ে মাস্টার্স শেষ করেছেন নাহারীন। তারপর ফ্যাশন ডিজাইন দিয়ে তার ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু। বর্তমানে কাজ করছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় লিডিং ফ্যাশন ব্র্যান্ড এনার্জিপ্যাকের প্রতিষ্ঠান ওকোডে।

তিনি একসঙ্গে দুটি বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হেড অব অপারেশন ও ইনোভেশনের দায়িত্বে আছেন নাহরীন।

তার কাছে প্রশ্ন রাখলাম একজন মানুষ কী করে এতোগুলো বিভাগ একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারে?

হাসিমুখে তিনি জানালেন, আসলে সময়টাকে ধরে রাখতে জানতে হবে। কোনও কিছুই কঠিন না। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে সময়ের ব্যবহারটা আপনি কীভাবে করছেন সেটা বুঝতে হবে। আমি সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠি। ৯টায় অফিসের উদ্দেশে বের হই। রাতে যখন বাসায় আসি তখন আমি অফিসের কোনও কল রিসিভ করি না। 

তিনি বলেন, আমি চেষ্টা করি, অফিসের কাজ অফিসেই করে আসতে। আবার আমি যেহুতু শিক্ষকতা করছি। আমার ছাত্রদেরকেও সময় দিতে হচ্ছে। এই পেশাগুলোর সমন্বয়ের একটি বড় শক্তি হচ্ছে ডিসিপ্লিন। সবকিছুই সম্ভব। তবে সময়কে ম্যানেজ করার দক্ষতা থাকতে হবে।

কর্পোরেট ফ্যাশন হাউসে জব করার পাশাপাশি আপনি শিক্ষকতা পেশা বেছে নিলেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি শান্তা মারিয়ামে পড়াশোনা করেছি। পড়শোনা শেষ করার পরেও ক্যাম্পাসের সঙ্গে যোগাযোগ হতো। বিভিন্ন সেমিনারে যেতাম। আমাকে যখন অফার করা হলো, আমি আর না করিনি। আমিও চেয়েছিলাম আমার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে।

ছাত্রদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানালেন, শিক্ষক-ছাত্রের সম্পর্ক সবসময়ই ভালো থাকে। আমার সঙ্গে তাদের একটা ভালো বোঝাপড়া আছে। 

কর্পোরেট চাকুরির পাশাপাশি শিক্ষকতা পেশা এই ভিন্নতা প্রসঙ্গে তিনি জানান, আমার যদি সামর্থ্য থাকে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের পেশার চ্যালেঞ্জ নিতেই পারি। তবে আমি যখন ওকোডে থাকি, তখন শুধু ওকোডের কাজেই সময় দিই। আবার আমি যখন শিক্ষকতা করি তখন আমার সেই ধ্যানটিই মাথায় থাকে।

তিনি আরও বলেন, অফিসের পর আমি ছাত্রদের সঙ্গে অনলাইনে কিছুটা সময় কাটাই। যেহেতু আমি দশম ও ১২তম  সেমিস্টারে ক্লাস নেই, সেহেতু বিভিন্ন ধরনের বিষয় থাকে তাদের জানার। আমি মনে করি প্রত্যেকটা প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার অধিকার তাদের আছে। সপ্তাহে একটা বা দুটা ক্লাসে তো আর হয় না। একটা প্রশ্নের এক সপ্তাহ অপেক্ষা করাও ঠিক না। আমি জানি ছাত্ররা অনেক বেশি জানে এবং তাদের ভবিষ্যতও অনেক উজ্জ্বল। তাদের এখন দিক নির্দেশনাটা খুব প্রয়োজন। চেষ্টা করি ছাত্রদেরকে সর্বোচ্চটা দেওয়ার।

একই সঙ্গে দুটি ভিন্ন পেশায় প্রতিবন্ধকতা কী বলে মনে করেন? নাহারীন প্রতিউত্তরে জানালেন, কিছু তো প্রতিবন্ধকতা আছেই। তারপরও আমি পারি, আমি পারবো এই বিষয়টি সবচেয়ে বেশি জরুরি। সময়টিকে একটি ছকে ফেলতে পারলে সব প্রতিবন্ধকতাকেই জয় করা যায়।



মন্তব্য করুন