বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা : মার্কিন কংগ্রেসম্যানের টনক নড়াল প্রবাসী সাংবাদিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, যুক্তরাষ্ট্র
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:১৫ |আপডেট : ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৪৮
প্রবাসী সাংবাদিক ছাবেদ সাথী ও মার্কিন কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস
প্রবাসী সাংবাদিক ছাবেদ সাথী ও মার্কিন কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস

বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)-এর ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ সংক্রান্ত বিভান্ত্রিকর বক্তব্যে মার্কিন কংগ্রেসম্যানের টনক নড়াল প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিকের প্রশ্ন সংবলিত লিখিত চিঠি পেয়ে মার্কিন কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-এর ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ সংক্রান্ত বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

গত সোমবার (৩১ জানুয়ারি) নিউ ইয়র্কের কুইন্সের একটি রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্নভোজের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকসের বক্তব্যের সঠিক ব্যাখ্যা চেয়ে গত বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) রাতে প্রবাসী সাংবাদিক ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস'র সম্পাদক ছাবেদ সাথী কংগ্রেসম্যানের ফেসবুকে ক্ষুদে বার্তায় একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। উক্ত চিঠি পেয়ে পরদিন মার্কিন হাউজ অব ফরেন কমিটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি তার বক্তব্যের সঠিক ব্যাখ্যা দেন।

কংগ্রেসম্যানের উদ্দেশ্যে সাংবাদিক ছাবেদ সাথী চিঠিতে লেখেন-

প্রিয় কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিকস,

গত সোমবার (৩১ জানুয়ারি) কুইন্সের একটি রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্নভোজের অনুষ্ঠানে আপনি বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেটি বাংলাদেশের বেশিরভাগ সংবাদপত্রে ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছে বলে মনে করছি। আপনি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‍্যাব)-এর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আসলে কী বলেছিলেন তা আমরা জানতে উৎসাহী। আপনার বক্তব্য ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশে দূতাবাস ও পত্রপত্রিকায় যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে। আপনার এ বক্তব্য সঠিক কিনা জানাবেন?  

শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ন্যায্য হবে না। সম্প্রতি র‌্যাব ও র‌্যাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞাকে দৃঢ় সমর্থন দিয়ে ডব্লিউ মিকস বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে আমি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি নিষেধাজ্ঞা নির্দিষ্টভাবে দেওয়া হলে সেটি বেশি কার্যকর। বাংলাদেশের ওপর সামগ্রিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ন্যায্য হবে না।

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু নিশ্চিত করার জন্যও কাজ করতে চান মার্কিন কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক দৃঢ় করা আমি সবসময় সমর্থন করবো। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করাসহ দেশটির মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করার জন্য কাজ করবো।

এর আগে গত সোমবার (৩১ জানুয়ারি) নিউ ইয়র্কের কুইন্সের একটি রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্নভোজের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস যে বক্তব্য প্রদান করেছিলেন সেটি বিকৃত করে ভূল তথ্য মিশিয়ে দেশ বিদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছিলেন ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। মধ্যাহ্নভোজের উক্ত অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ মিশনের কোন প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের কিছু নেতাকর্মি ও স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের যোগসাজসে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে বিভ্রান্তিকর তথ্য সমৃদ্ধকর উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।   

এ বিষয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি সকালে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার এজেডএম সাজ্জাদ হোসেনকে একটি চিঠি পাঠান বাংলা প্রেস। চিঠিতে জানতে চান গত ৩১ জানুয়ারি রাতে আপনার প্রেরিত 'বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র' শিরোনামের এ প্রেস বিজ্ঞপ্তি/সংবাদের সত্যতা নিয়ে অনেকেই নানা প্রশ্ন তুলেছেন। কংগ্রেসম্যান এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক হাউস কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকসের মধ্যাহ্নভোজের এ আয়োজন কারা এবং কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছে তা উল্লেখ নেই। এছাড়াও কংগ্রেসম্যান মিকস এর নিউজের সত্যতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছে। উক্ত অনুষ্ঠানে কংগ্রেসম্যান মিকস মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তেমন কোন গুরুত্বপুর্ণ কথা বলেননি অথচ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে- বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চান না যুক্তরাষ্ট্র। আমরা নিশ্চিত করে বলতে চাই যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি না। আমরা এখনও বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সাথে কাজ করছি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ রিপোর্টের স্বপক্ষে আপনার/আপনাদের কাছে কোন ভিডিও আছে কি? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন। গত তিন দিনেও উক্ত চিঠির কোন উত্তর দেননি দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে 'বাংলাদেশিজ ফর গ্রেগোরি মিকস' আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠনে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিসহ অন্যতম আয়োজক আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কমিউনিটি লিডার মোরশেদ আলমকেও কংগ্রেসম্যান মিকস বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ২ ফেব্রুয়ারি ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু মোরশেদ আলমসহ কেউ এর সঠিক জবাব দেননি। 



মন্তব্য করুন