শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মান্ধাতার আমল : মান্ধাতা আসলে কে ছিলেন?

অনলাইন ডেস্ক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:৫৫ |আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:০৮
রাজা মান্ধাতা
রাজা মান্ধাতা

প্রায়ই পুরোনো কোনো বিষয়ের উদাহরণ হিসেবে মানুষের মুখে শোনা যায় ‘মান্ধাতার আমলের’ কথা। তবে কখনো কি ভেবে দেখেছেন কে এই মান্ধাতা? অথবা কি হতো তার আমলে? বাংলা একাডেমি অভিধান বলছে, মান্ধাতা শব্দের অর্থ সূর্য বংশীয় প্রাচীন নৃপতি বা রাজাবিশেষ। আর মান্ধাতার আমল অর্থ মান্ধাতার শাসনকাল। অর্থাৎ অতি প্রাচীনকাল। মূলত মান্ধাতা এক পৌরাণিক চরিত্র।

ভাষাতত্ত্ববিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ শাহরিয়ার রহমান জানান, মান্ধাতার আমল শব্দটি এসেছে সত্য যুগের রাজা মান্ধাতার জীবন থেকে। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী রাজা মান্ধাতা খুব দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। শৈশব না দেখা রাজা যুবক হয়েছিলেন মাত্র ১২ দিনে। তিনি দ্রুত বড় হওয়াতে, মান্ধাতার আমল বলতে কোনো বিষয় দ্রুতই পুরোনো হয়ে যাওয়াকে বোঝানো হয়। এর বাইরে আরেকটি ব্যাখ্যা প্রচলিত রয়েছে। সময়কাল হিসাব করলে দেখা যায়, রাজা মান্ধাতা প্রায় ৩৫ লাখ বছর আগে রাজকার্য পরিচালনা করেছেন। ফলে মান্ধাতার আমল মানে বহু বছর আগের কিছু।

তিনি আরও বলেন, ‘রাজা মান্ধাতার জন্মের ইতিহাসও খুব চমকপ্রদ। কৃত্তিবাসের 'রামায়ণ'-এ উল্লেখ আছে, মান্ধাতা হলেন সূর্য বংশের রাজা যুবনাশ্বের পুত্র। তিনি পিতৃ-গর্ভে জন্মেছিলেন। তবে পিতৃ-গর্ভে জন্মানোয় শিশুর জন্য দুধ পাওয়া যাচ্ছিলো না। তখন দেবরাজ ইন্দ্র তার মুখে নিজের তর্জনী দিয়ে বলেছিলেন, 'মামধাস্ততি'-সংস্কৃত এই শব্দের মানে “আমাকে পান করো।” আর এ ঘটনার পর থেকে সংস্কৃত শব্দ মাম এবং ধাতা- মিলেই তার নামকরণ হয় মান্ধাতা। মূলত দেবরাজ ইন্দ্রের তর্জনী চুষে জীবনের প্রথম খাদ্য-পানীয়ের স্বাদ পাওয়ায় মান্ধাতার শারীরিক বৃদ্ধি হয়েছিল ঐশ্বরিক দ্রুততায়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক খন্দকার খায়রুন্নাহার বলেন, সংস্কৃত থেকে আসা অনেক শব্দই মূলত পৌরাণিক কাহিনী বা সাহিত্যের মাধ্যমে বিবর্তন হয়ে মূল ভাষায় মিশে গেছে।

মূলত, বাংলা ভাষায় অনেক আগের কোনো সময় বোঝাতে অনেকেই বিভিন্ন রাজা বা নবাবদের আমল বলে থাকেন। তবে পৌরাণিক কাহিনী হলেও মান্ধাতার আমলের চেয়ে পুরনো কোনো আমল বাংলা ভাষায় খুঁজে পাওয়া যাবে না।



মন্তব্য করুন