শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জলহস্তি সাঁতার জানে না?

অনলাইন ডেস্ক
১৬ মার্চ ২০২২ ১৭:৫০ |আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২২ ০৭:১৮
জলহস্তি
জলহস্তি

ওকাভাঙ্গো দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম বড় নদী, এটি উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ১৬শ কিলোমিটার প্রবাহিত হলেও এর গতিপথ কখনোই সমুদ্র পর্যন্ত পৌঁছায় না।

প্রচুর জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ এই নদীটি একইসঙ্গে বালি এবং পলিতেও ভরপুর। নিজের যাত্রাপথে বাতসোয়ানায় প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই নদীটি কালাহারি মরুভূমির শুষ্ক আবহাওয়ার মুখোমুখি হয়, ফলে নদীর সমৃদ্ধ পলল জমাট বাঁধতে শুরু করে। আর এভাবেই বিশ্বের বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ ব-দ্বীপ গঠিত হয়।

এই ব-দ্বীপে নানা প্রজাতির বিকাশ ঘটে এবং এই সমস্ত প্রজাতির ভেতর রয়েছে প্রকৃতির এক বিস্ময় জলহস্তি। এরা পানিতে সাঁতার কাটতে পারে না। তবে তাদের হাড়ের গঠন আর শরীরের ভারের কারণে তারা অনায়াসেই পানিতে ভেসে থাকতে পারে।

জলহস্তি একবার পানিতে ডুব দিয়ে অনেকক্ষণ থাকতে পারে, পানির নিচে তারা শ্বাস আটকেই চলাফেরা করতে থাকে। তবে নিশ্বাস নিতে এদের আবার পানির উপরে ভেসে উঠতে হয়।

জলহস্তিরা এই পৃথিবীতে প্রায় ৫৫ মিলিয়ন বছর আগে থেকে বিচরণ করছে। সাব-সাহারিয়ান আফ্রিকা থেকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়েছে তারা। প্রাচীন গ্রিক ভাষায় তাদের নামের অর্থ ‘নদীর ঘোড়া’। মামালদের মধ্যে তাদের তৃতীয় বৃহত্তম ধরা হয়। হাতি ও হোয়াইট রাইনোর পরই আকারের দিক থেকে তারা বিশাল। জলে তাদের কাছাকাছি প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে রয়েছে তিমি আর ডলফিন। সাধারণত ঘাস খায় তারা। গড় আয়ু ৪৫ বছর। বেঢপ আকৃতির হলেও বেশ চটপটে আর আগ্রাসী হতে পারে তারা। তবুও তারা অনেক সুন্দর।

জলহস্তিরা প্রাকৃতিকভাবে মিশুক, এরা একই জায়গায় দলবদ্ধ হয়ে থাকতে পছন্দ করে। এরা এমন একটি জায়গাকে বসবাসের জন্য বেছে নেয় যেখানে এরা নদীর বা সরু খালের তলদেশের নাগাল পায়। জলহস্তিদের চোখ আর নাক মাথার সবচেয়ে উঁচু স্থানে অবস্থিত হওয়ায় এরা সহজেই পানির তলদেশে পুরো শরীর ডুবিয়ে রেখে নিশ্বাস নিতে আর চারদিকে নজর রাখতে পারে। এদের জন্য পানির উপরে নাক তুলে রাখা এবং শ্বাস নেওয়া সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়, এমনকি তারা ঘুমানোর সময়ও এটি করতে পারে।

ওকাভাঙ্গো নদীর ভেতর দিয়ে চলার সময় এরা আগাছার মাঝে পথ খুঁজে নেয়, আর এদের বানানো পথটাই পরে চলাচলের জন্য সরু খাল হিসেবে ব্যবহার করে স্থানীয়রা। দূর থেকে বা আকাশপথে এই সরু খালগুলোকে দেখলে অনেকটা সূক্ষ্ম জালের মতো মনে হয়। এই জলহস্তিরাই ওকোভাঙ্গো ব-দ্বীপের স্থপতি, এমনটাই মনে করেন অনেক পরিবেশবিদ।



মন্তব্য করুন