বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিড়ম্বনাহীন-স্বস্তিদায়ক হোক ঈদযাত্রা

সামছুল আলম সাদ্দাম
২৬ এপ্রিল ২০২২ ০১:২১ |আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২২ ১০:১৬
সামছুল আলম সাদ্দাম, লেখক ও সাংবাদিক
সামছুল আলম সাদ্দাম, লেখক ও সাংবাদিক

এবারের ঈদে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত ২ বছর করোনার কারণে মানুষ বাড়ি যেতে পারেনি। এবার মানুষ গ্রামমুখী। আশঙ্কা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সড়কপথে ভোগান্তি বাড়বে। রেলপথ ও জলপথেও একই আশঙ্কা রয়েছে। ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে এখন থেকে প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে।

দেখা যাচ্ছে, ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথগুলোয় এখনই শুরু হয়েছে যানজট। সামনের দিনে এটা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলাচলকারী ঘরমুখো যাত্রীরা বেশি ভোগান্তির শিকার হতে পারেন। এ পথেই উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। ঈদ দোরগোড়ায় চলে এসেছে কিন্তু এবারো সড়কপথে ঈদ যাত্রায় তেমন কোনো সুখবর নেই। এবার ট্রেনে ৫ গুণের বেশি যাত্রী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলানোই এবার ট্রেনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ২০ এপ্রিলের মধ্যে সব মহাসড়ক চলাচলের উপযোগী করার নির্দেশ দেয়। আদৌ কি বাস্তবায়ন হয়েছে? ঈদের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে। 

ঈদের আগের চার দিনে ঢাকা ছাড়তে পারেন প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। ওই চার দিনের প্রতিদিন গড়ে ৩০ লাখ মানুষ ঢাকা থেকে গ্রামে যেতে পারেন। যাত্রীদের বড় অংশ যানবাহনের সংকটে পড়বে। এর সঙ্গে যোগ হবে পথের ভোগান্তি ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি। 

প্রতি বছরই ঈদযাত্রাকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দেন, আশ্বাস-প্রতিশ্রতি দেন। তারপরও ঈদ মৌসুমে কিছু দুর্ঘটনা, প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সরকারের পক্ষ থেকে এবারো ঈদে যাত্রী দুর্ভোগ কমাতে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। 

পত্রপত্রিকায় নানা জায়গায় সড়কপথের বেহালদশার ছবি দেখা গেলেও সরকারের সংশ্লিষ্টদের দাবি, এবার দেশের সড়ক যোগাযোগ ভালো অবস্থায় আছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ, সেতু সচল রয়েছে। এবারো ঈদ উপলক্ষে সড়কপথে বিআরটিসির বাড়তি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে; ট্রেনে বাড়তি বগি ও ইঞ্জিন সংযোজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রেন ও নৌযানের ছাদে যাত্রী ওঠা ঠেকাতে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা এসব উদ্যোগের কার্যকারিতা দেখতে চাই। পরিবহন মালিক-শ্রমিক, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং যাত্রী সাধারণ সবাই যদি নিজ নিজ অবস্থানে দায়িত্বশীল আচরণ করেন তাহলে ঈদযাত্রা অনেকটাই  নিরাপদ রাখা সম্ভব। পরিবহন ব্যবসায়ীরা যেন ত্রুটিপূর্ণ যান পথে না নামান, চালকরা যেন বেপরোয়া যান চালনা থেকে বিরত থাকেন, হাইওয়ে পুলিশরা যেন মানবিকতা নিয়ে তৎপর থাকে, আর সর্বোপরি যাত্রীরা যেন ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল না করেন- এ সময়ে এই আমাদের প্রত্যাশা।

সামছুল আলম সাদ্দাম 

লেখক ও সাংবাদিক



মন্তব্য করুন