শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবশেষে ১৮ আবাসিক শিক্ষার্থীকে হলে তুললেন প্রভোস্ট

রাবি প্রতিনিধি
১ জুলাই ২০২২ ২১:৫১ |আপডেট : ২ জুলাই ২০২২ ১২:৪৪
বিছানাপত্র নিয়ে রাবির হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে গেইটে অবস্থান নিয়েছেন হলে উঠতে ইচ্ছুক আবাসিক শিক্ষার্থীরা
বিছানাপত্র নিয়ে রাবির হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে গেইটে অবস্থান নিয়েছেন হলে উঠতে ইচ্ছুক আবাসিক শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে অবৈধভাবে থাকা অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আসন থেকে নামিয়ে সেখানে বৈধ শিক্ষার্থীদের তুলে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হল প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শুক্রবার (০১ জুলাই) বিকেল চারটার দিকে হলটিতে অভিযান চালানোর কথা জানান প্রাধ্যক্ষ। কিন্তু ছাত্রলীগের বাঁধার মুখে তুলতে ব্যর্থ হন প্রভোস্ট। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা পর অবশেষে ১৮ আবাসিক শিক্ষার্থীকে সিটে তুলে দেয় হল প্রশাসন।

হল সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ৯৪টি আসন খালি হয়। এরপর হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে ভাইভা নিয়ে অ্যাকাডেমিক ফলাফল ও অন্যান্য বিবেচনায় ৬৬ জন শিক্ষার্থীকে হলে আসন বরাদ্দ দেয়। তবে এই ৬৬ জনের মধ্যে মাত্র ২২ জনকে তাঁদের আসনে তুলতে পেরেছে প্রশাসন। এখন পর্যন্ত ৯৪টি আসনের বিপরীতে ৭২টি দখল হয়ে আছে। বৈধভাবে যাদের আসন দেওয়া হয়েছে, তাঁরাও অনাবাসিক দখলদারদের দ্বারা হুমকি পাচ্ছেন। এমনকি হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

এর প্রক্ষিতে গত ২৩ জুন হল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর করা একটি নোটিশের মাধ্যমে হলে অবস্থান করা অনাবাসিক, বহিরাগত ও অন্য হলের শিক্ষার্থীদের ২৯ জুনের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কোনো শিক্ষার্থী তাঁর সমস্যার বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ২৮ জুনের মধ্যে অভিভাবকসহ হল প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। তবে শর্ত অনুযায়ী কেউ দেখা করেননি। এমনকি অনাবাসিক কোনো শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত নেমেও যাননি। ওই নোটিশে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে বাধা দেওয়া হলে তাৎক্ষণিক আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল।

হলে অবস্থানকারী অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ছাত্রলীগের কর্মী হওয়ায় হল প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়েছে ছাত্রলীগ। হল প্রাধ্যক্ষ হল থেকে ছাত্রলীগ বের করে জামায়াত-শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায় বলে অভিযোগ করেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ।

হলে উঠতে বিকেল ৪টা থেকে হলে অপেক্ষা করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল আসতে দেড়ি করায় হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের হলে তুলতে বিলম্ব করতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাদের বিছানাপত্র নিয়ে হলের গেইটে অবস্থান নেন। পরে অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল হলে আসলে তিনিসহ ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর এবং হলের আবাসিক শিক্ষকদের নিয়ে মিটিংয়ে বসেন হল প্রাধ্যক্ষ। পরে শিক্ষার্থীদেরকে যে যার রুমে তুলে দেওয়া হয়। এসময় ওই সিটে অবস্থানকারী অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে ওই সিট থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।

হলে ওঠা এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে হলে ভাড়া দিয়ে আসছি কিন্তু হলে উঠতে পারছিলাম না। প্রভোস্ট স্যার আজকে হলে তুলে দেওয়ার জন্য ডাকে। এ জন্য আমি তিনটার দিকে বিছানাপত্র নিয়ে হলে আসি। পরে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা অপেক্ষার পর স্যার আমাকে আমার সিটে তুলে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন ন্যায্য অধিকার পায়। তাই আমরা হলে সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে বরাদ্দ দিয়েছি। শত বাধা সত্ত্বেও সেই বরাদ্দের ১৮ জন শিক্ষার্থীকে আমরা সফলভাবে তুলতে সক্ষম হয়েছি।



মন্তব্য করুন