বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুপ্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় জবি ছাত্রলীগ নেত্রীকে হলে উঠতে দেননি আকতার

জবি প্রতিনিধি
২ জুলাই ২০২২ ২০:১৬ |আপডেট : ৩ জুলাই ২০২২ ১২:৩০
জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন
জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন

'আমার অপরাধ ছিল আমি তার কুপ্রস্তাব মেনে নেইনি। ভেঙ্গে গেল ৭ বছরের ভাই-বোনের সম্পর্ক, একমাত্র ছাত্রী হলে ছাত্রলীগ থেকে ৩০০ মেয়ে হলে সিট পেলেও আমাকে সে হলে উঠতে দেয়নি।'

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনই অভিযোগ তুলেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফৌজিয়া জাফরিন প্রিয়ন্তী। অভিযোগ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইনের বিরুদ্ধে।


শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেওয়ার পর এ নেত্রী নিজের টাইমলাইনে এক পোস্টের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি অভিযোগ তুলে ধরেন।

ফৌজিয়া জাফরিন লিখেছেন, আমার জন্য তার অনেক বড় ভাইরা বললেও সে তার কানে তোলেনি কারণ আর তো আমাকে প্রয়োজন নেই কর্মী হিসেবে, এখন সে নেতা তার প্রয়োজন মেটাতে পারলেই কেবল সে প্রয়োজনবোধ করবেন। বাংলাদেশের এমন কোনো হল আছে কি যেখানে কোন গেস্ট গিয়ে একদিন থাকতে পারে না, কিন্তু এই আমি প্রিয়ন্তী হলে একদিন গিয়েছিলাম দেখতে হলে থাকার কেমন অনুভূতি কিন্তু এই আকতার জানতে পেরে প্রভোস্ট ম্যামকে চাপ দিয়ে সেই রাতেই আমাকে হল থেকে বের হতে বাধ্য করে। আমার কি অপরাধ ছিল...? ১৪ সাল থেকে প্রতিদিন আট-দশ ঘন্টা ইভেন আরো বেশি পরিশ্রম করে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কমিটিতে এসেছি আমাকে হলে উঠতে দেওয়া হয়নি। এর পিছনের প্রধান কারণ হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার। আমার দীর্ঘ আরাধ্য ও প্রতীক্ষার হল থেকে আমার প্রাপ্য অধিকার থেকে আমাকে বঞ্চিত করছে।  

প্রিয়ন্তী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর তার পিছনে হেঁটেছি, আপনি তার কয় দিনের কর্মী সেটা আগে ভাবুন। আমার মাদারীপুরের তিনজন ক্যান্ডিডেট ছিল কিন্তু তার মধ্যে থেকে তাকে বেছে নিয়েছিলাম নেতা হিসেবে, বাকি দুজন ভাই সেজন্য আমার প্রতি অনেক মনঃক্ষুন্ন ছিলেন কিন্তু আমি আমার জায়গায় অবিচল ছিলাম কারণ রাজনীতিতে জায়গা পাল্টানো শিখিনি। রাব্বানী ভাই সাবেক হওয়ার পরে এই লোককে আমি আমার এলাকায় সদর নিয়ে গিয়ে আমাদের মেয়রের সাথে সর্বপ্রথম আমিই পরিচয় করিয়ে দিয়েছি, আমার রাজনৈতিক যত ভাই ছিল সবার কাছে বলছি আমি ভাই সাথে রাজনীতি করি, আপনারা একটু দেখবেন ভাইয়ের বিষয়টা, মাদারীপুর থেকে নেতা হলে মাদারীপুরের ছোট ভাইরা ভালো থাকবো, আর এমন কত কিছু করছি যা সেগুলো লিখে বলা সম্ভব না। আল্লাহ মনের আশা পূরণ করলো কিন্তু তারপর থেকে আকতার ভাইয়ের আসল রূপ বের হতে থাকলো, লেখক দাদার বাসা থেকে যেদিন ফুল দিয়ে নিচে নামলাম তার সাথে সেদিন সে সকল পোস্টেড নেতার সামনে বসে আমাকে আর জিনিয়া আফ্রিনকে উদ্দেশ্য করে বললেন কোন হাই কমান্ডের ফোনে সে হল কমিটি দিবে না দরকার হয় সে সাবেক হয়ে যাবে সে নেতা হয়ে গেছে তার নামের আগে সাবেক লেখা থাকবে তার সমস্যা নেই, আগে তার কর্মী হতে হবে তাকে নেতা মেনে ধারণ করতে হবে তবেই সেই হলের নেত্রী বানাবে, আমরা অবাক হয়ে রইলাম হলের কথা কই থেকে আসলো নেতা হল ১০ দিন মাত্র তখন। সেদিনের পর থেকে তার বিভিন্ন আবদার রাখতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তার সাথে আমার দীর্ঘ ৭ বছরের রাজনীতিকে সে মুহূর্তেই অস্বীকার করেছেন, এমন কি সে আমার ছোটবোনদের বলে দিয়েছেন আমাকে সালাম দিলে পদ পাবে না তারা।

এ বিষয়ে ফৌজিয়া জাফরিন প্রিয়ন্তী বলেন, "কুপ্রস্তাব বলতে সে যা বুঝাইতে চাইছে তাঁর মত করে চলতে হবে। তাঁর মত করে চলতে হবে বলতে সে বুঝাইছে সে যেখানে যেতে বলবে সেখানে যেতে হবে, যা করতে বলবে তা করতে হবে। আমিতো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম কোনো কিছুই বাদ দিতাম না। কিন্তু এর বাইরে সে কি বুঝাইছে আশা করি আপনাদের এটা আর ডিটেইলস এ বলতে হবে না।"

এদিকে এ পোস্ট দেওয়ার পর বিভিন্ন চাপের মুখে পড়েছেন বলেও জানান তিনি। 

প্রিয়ন্তী আরও বলেন, পোস্ট দেওয়ার পর তিনি (আকতার হোসাইন) আমাকে কল দিয়ে বলেন যা করলি অনেক ভালো করলি। আমি যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি আমার সঙ্গে অন্যায় করেননি, তখন তিনি বলেন হ্যাঁ আমি অন্যায় করেছি কিন্তু তুই এটা আমার এ সময়ে তুলে না ধরলেও পারতি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইনকে কল দেওয়া হলেও তিনি কেটে দেন।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের 'সুপার ইউনিট' খ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জন্য স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।



মন্তব্য করুন