শ্রীলঙ্কার কাছে একদিনেরও জ্বালানি নেই
কলম্বোতে পেট্রল এবং ডিজেলের জন্য নাগরিকদের দীর্ঘ সারি। সংগৃহীত ছবি
অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার কাছে পুরোপুরি একদিন চলার মতো জ্বালানির মজুত নেই। কলম্বোতে রোববার (৩ জুলাই) শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়,
অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে জ্বালানির মজুত না থাকায় শ্রীলঙ্কায় গণপরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে।
রাজধানী কলম্বোতে পেট্রল এবং ডিজেলের জন্য নাগরিকদের দীর্ঘ সারি কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত চলে গেছে। যদিও
দেশটির বেশিরভাগ পাম্প স্টেশন দিনের পর দিন জ্বালানিবিহীন রয়েছে। শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী
কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেছেন, দেশে প্রায় ৪ হাজার টন পেট্রল মজুত আছে। যা দেশের একদিনের
চাহিদারও কম।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে লঙ্কান এই
মন্ত্রী বলেছেন, দেশে পেট্রলের পরবর্তী চালান আগামী ২২ এবং ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে আসতে
পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। আমরা জ্বালানির অন্যান্য সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ
করছি। কিন্তু ২২ জুলাইয়ের আগে নতুন কোনও সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছি না।
গত সপ্তাহে নগদ অর্থ সংকটে ভুগতে থাকা
শ্রীলঙ্কা জরুরি পরিষেবা খাতের পরিবহন ছাড়া অন্যান্য যানবাহনের পেট্রল এবং ডিজেলের
বিক্রিতে দুই সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
এএফপি বলছে, রোববার দেশটির বেশিরভাগ দোকানপাট
বন্ধ রয়েছে। সোমবার ব্যাংক ও অফিস পুনরায় চালু হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে
আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার পরিবহন ব্যবস্থার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ
যানবাহনই বেসরকারি মালিকানাধীন। জ্বালানির সংকটের কারণে এই খাতটি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শ্রীলঙ্কার বেসরকারি মালিকানাধীন বাস পরিবহন
সংস্থার চেয়ারম্যান গেমুনু উইজেরত্নে বলেন, আমাদের সদস্যদের মালিকানাধীন ২০ হাজার বাসের
মধ্যে বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ১ হাজার বাস পরিচালনা করা হচ্ছে। ডিজেল পাওয়ার কোনও
উপায় না থাকায় সোমবার এই পরিস্থিতি নিশ্চিতভাবেই খারাপ হবে।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা
লাভের পর এবারই সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। করোনা মহামারি, জাতীয়
অর্থনীতি পরিচালনায় সরকারের অদক্ষতা, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয়
কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত তলানিতে নেমে যাওয়ায় শ্রীলঙ্কায় বিপর্যয়কর পরিস্থিতি
তৈরি হয়েছে। যদিও দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপক্ষে এখনো পদত্যাগ করেননি।
মন্তব্য করুন