নিরাপদ ক্যাম্পাস এবং ঘাতক চালকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেন তারা। এতে বিভাগটির সাথে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

ঘন্টাব্যাপী চলা এ মানববন্ধনে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে ৫ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো, ঘাতক চালকের শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাসের রাস্তায় মোটরচালিত যানবাহনের জন্য গতিসীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া ও গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় গতিরোধক নির্মাণ করা, নম্বরপ্লেট ও বৈধ কাগজপত্রহীন যানবাহন শনাক্ত করে সেগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ ঘোষণা করা, লাইসেন্সবিহীন যানবাহন চালকদের ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা ও এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পথচারীদের জন্য ক্যাম্পাসের সড়কের দুই পাশে স্বতন্ত্র ফুটপাত /ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা।

সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া ফেরদৌসীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো আরও বিস্তৃত করতে হবে এবং সড়কগুলোর পাশে ফুটপাত দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে গাড়ির আনাগোনা বেড়েছে, সেই সাথে শিক্ষার্থীদেরও সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের  সড়কগুলোতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে হবে।’

সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সভাপতি ও সহযোগী অধ্যাপক রাকিব আহমেদ বলেন, ‘দুর্ঘটনার জন্য দায়ি ব্যক্তি যেই হোন না কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুসারে বিচার করতে হবে এবং একই ধরনের ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে প্রশাসনকে নিশ্চয়তা দিতে হবে। সেই সাথে আমাদের দাবিদাওয়া পূরণ না হলে এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এমরান জাহান বলেন, ‘একটা আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার অটো রিকশা চলতে পারে না। এখানে রিকশা নিয়ে বাণিজ্য চলছে। অনিয়ন্ত্রিত অপরিকল্পিতভাবে অনেক গুলো অটোরিকশা ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। প্রাইভেট কার আর মোটরবাইক অনিয়ন্ত্রিত গতিতে চলছে। রাস্তায় হাঁটার পরিবেশ নেই। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাবো, রাস্তায় হাঁটার জন্য ফুটপাতের ব্যবস্থা করেন। গতি নিয়ন্ত্রণ এবং বহিরাগতের গাড়ি প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ আনেন।’

এছাড়াও মানবন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইতিহাস বিভাগের, অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মো. সোহেল রানা, অধ্যাপক মাসুম শাহরিয়ার, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান, অধ্যাপক কবিরুল বাশার, অর্থনীতি বিভাগের মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. সালেকুল ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো.এজহারুল ইসলাম, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা ইসলাম, সহকরী অধ্যাপক সালমা আহমেদ, প্রভাষক সালমান সাবিহা, ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় এবং ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ প্রমুখ।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড নুরুল আলমের কাছে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি প্রদান করেন।

প্রসঙ্গত, গত  ২ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর  বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান রাস্তা পার হওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ফেরদৌস মাহমুদ নিয়নের বেপরোয়াভাবে মোটর সাইকেলে পিছন থেকে ধাক্কা দেয়।  আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে জাহিদ বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।