শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই হাত না থাকলেও থেমে নেই অদম্য হাবিবুর

ইবি প্রতিনিধি
৬ জুন ২০২৩ ০৪:৩৫ |আপডেট : ৬ জুন ২০২৩ ১৭:৫৯
হাবিবুর রহমান হাবিব
হাবিবুর রহমান হাবিব

জন্মগত ভাবেই দুটি হাত নেই হাবিবুরের। তবুও মনের প্রবল ইচ্ছে শক্তিতে ছোট বেলা থেকে পা দিয়ে লিখে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে রাজবাড়ী জেলার হাবিবুর রহমান হাবিব।

শারীরিক প্রতিবন্ধীকতা আটকে রাখতে পারেনি হাবিবের মেধাকে। তাই তো দুই হাত না থাকলেও পা দিয়ে লিখে এবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ডি' ইউনিটে 'ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামী শিক্ষা অনুষদে' ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছেন সে। এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন সে।

হাবিব রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হিমায়েতখালি গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের দরিদ্র কৃষক আব্দুস সামাদের ছেলে। হাবিব পাংশার পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে পা দিয়ে লিখে আলিমও পাস করেছেন।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান হাবিবুর রহমান। চার ভাই বোনের মধ্যে ৩য় সে। বড় দুই বোনের বিয়ে হলেও পরিবারে রয়েছে ছোট বোন। সেও পড়াশুনা করে। জন্মগতভাবেই হাতবিহীন হাবিব। ছোট বেলায় বাবা মা, চাচা ও পরিবারের অন্যদের অনুপ্রেরণায় পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করে। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করে। শিক্ষা জীবনের প্রথম স্তরেই সে কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হিমায়েতখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে পা দিয়ে লিখে পিএসসিতে ৪.৬৭ পয়েন্ট পেয়ে পাশ করেন। এরপর শুরু হয় মাধ্যমিক শিক্ষা জীবনের দ্বিতীয় স্তর। এরপর পাংশা উপজেলার পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪.৬১ পয়েন্ট পেয়ে পাশ করেন। পরবর্তীতে আর পেছন ফিরে না তাকিয়ে একই মাদরাসা থেকে ২০১৯ সালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪.৬৩ পায়।


হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী। দুই হাত নেই। পা দিয়ে লিখেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে আজ আমি আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি।এ পর্যন্ত আসতে আমার অনেক প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়েছে। নানান জন নানান কথা বলেছে। কিন্তু আমি তাতে কান দেইনি। নিজের আত্মবিশ্বাস ও ইচ্ছাশক্তির কারণে আজ আমি এতদূর এসেছি। এখন আমার স্বপ্ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া এবং বড় আলেম হওয়া।

হাবিবুরের সাথে আশা তার এলাকার চাচা আজমল হোসেন বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীকতা তাকে আটকে রাখতে পারেনি। তার অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে সে আজ এতদূর পর্যন্ত এসেছে। আমি তার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি।



মন্তব্য করুন

সর্বশেষ খবর
এই বিভাগের আর খবর