নিউইয়র্কে ঢাবির ১০২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
ছবি : সংগৃহীত
নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে প্রবাসী সাবেক শিক্ষার্থীরা। এ উপলক্ষে এই মিলনমেলার আয়োজন করা হয় কুইন্সের লাগোর্ডিয়া এয়ারপোর্ট মেরিয়টের ব্যাংকুয়েট হলে।
শুধু নিউইয়র্ক নয়, আনন্দ ভাগাভাগী করতে
এই অনুষ্ঠানে ছুটে আসেন নিউ জার্সি, ভার্জিনিয়া, পেনসেলভেনিয়াসহ ভিন্ন স্টেটে বসবাসরত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
নিজেদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিনটা
কেক কাটার মাধ্যমে শুরু করেন প্রবাসে থাকা ঢাবি শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশন
করা হয় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী
ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব জনাব মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর
উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা।
এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পা রাখলো ১০৩
বছরে। ১৯২১ সালের ১ জুলাই ৮৪৭ শিক্ষার্থী, ৩টি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু
হয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। তারপর শতবর্ষ পেরিয়ে এটি এখন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি
উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্মদিন উপলক্ষে গত ১ জুলাই
নিউইয়র্কে বসেছিল এর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা।
এর আগে পরিচয়পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
সাবেক শিক্ষার্থীরা নিজেদের পরিচয় তুলে ধরেন। তাদের বর্তমান পরিস্থিতি এবং কর্মকাণ্ড
সম্পর্কেও পরস্পরকে জানান। অনুষ্ঠানের বড় অংশজুড়ে ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণ।
এতে সাবেক শিক্ষার্থীদের অনেকে যেমন আনন্দে উদ্বেলিত হন, আবার অনেকে স্মৃতিকাতর হয়ে
পড়েন।
সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়
জীবনের স্মৃতিচারণ করেন ড. এনাম সরকার, সাংবাদিক আবুল কাশেম, কবি কাজী জহিরুল ইসলাম,
মাহমুদ খান মেনন, মুক্তি জহির, প্রযুক্তিব্যবসায়ী কায়েস মোহাম্মদ আলমগীর, ড. ইব্রাহীম
খলিল, সিলভিয়া সাবরিন, মো. খলিলুর রহমান, হজরত আলী, আনোয়ার খান, আরেফিন তুলু, ইমামুদ্দিন,
ইকবাল মাসুদ, শামীমা জাহান, রুবি আফরিন এবং ফাতিমা মৌসুমী ।
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
কাছে আমাদের ঋণের শেষ নেই। আমাদের জীবনকে আমূল বদলে দিয়েছে এই একটি প্রতিষ্ঠান। এই
বিশ্ববিদ্যালয় মানুষকে উদার হওয়ার শিক্ষা দেয়, মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করার শিক্ষা
দেয়, সর্বোপরি দেশ ও দশের কল্যাণে কীভাবে আরও কাজ করা যায়, তার শিক্ষা দেয় ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়।
বক্তারা আরও বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এটিই
একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যে একটি জাতির জন্ম দিয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়াসহ সকল বড়
বড় আন্দোলন সংগ্রামের সুতিকাঘার এই বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সময়ের ব্যবধানে এর শিক্ষার
মান কমে যাওয়া নিয়ে দেশে-বিদেশে আলোচনা উঠেছে। বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে ঢাবির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন
কেউ কেউ।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন
প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং স্বনামধন্য লেখক কাজী জহিরুল ইসলাম ও ড. ইব্রাহীম খলিলের হাতে
বিশেষ সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। লেখালেখির মধ্য দিয়ে তারা দুজন দেশে-বিদেশে শক্ত
অবস্থান তৈরি করেছেন। সম্মাননা গ্রহণ করে কবি জহির বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার সকল
অর্জন ও আনন্দের মূল প্রেরণা। ড. ইব্রাহীম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামীর তরুণদের নিয়ে
আশায় উদ্দীপ্ত হওয়ার কথা বলেন। প্রসঙ্গত,
কয়েক দশক ধরে লেখালেখির জগতে থাকা কাজী জহিরুল ইসলামের বইয়ের সংখ্যা ৯৭ এবং ড. ইব্রাহীম
খলিলের বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৬০।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী
ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে ম্যারিয়ট পরিণত হয় এক টুকরো টিএসসি, মলচত্বর
বা কার্জন হলে। অনুষ্ঠান শেষে হলেও কারো যেনো অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগের ইচ্ছে হচ্ছিল না।
আগামি বছর আরও বৃহত্তর পরিসরে জন্মোৎসব করার প্রত্যয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
মন্তব্য করুন