প্রথমবার অভিনয়ে ফারুকী, আছেন তিশাও

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও নুসরাত ইমরোজ তিশা
প্রায় ২৫ বছর ধরে নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সিনেমা, নাটক, ধারাবাহিকসহ অনেক নন্দিত কাজ দর্শককে উপহার দিয়েছেন তিনি।
দেশ-বিদেশের নানা চলচ্চিত্র উৎসবে সমাদৃত
হয়েছে তার পরিচালিত সিনেমা। এবার তিনি অভিনয় করছেন নিজ পরিচালিত সিনেমায়।
‘মিনিস্ট্রি অব
লাভ’-প্রজেক্টে জনপ্রিয়
১২ জন নির্মাতা ভালোবাসার গল্প নিয়ে ১২টি চরকি অরিজিনাল ফিল্ম বানাচ্ছেন। এই পুরো প্রজেক্টের
সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি নিজেই নির্মাণ করছেন দুটি সিনেমা।
কিছুদিন আগেই ঘোষণা দেওয়া হয় ফারুকীর প্রথম সিনেমা ‘মনোগামী’র। ‘সামথিং লাইক অ্যান
অটোবায়োগ্রাফি’- বা ‘অটোবায়োগ্রাফি’ ফারুকী পরিচালিত
আরেকটি সিনেমা।
আরেকটি আনন্দের ও বড় সংবাদ হচ্ছে, ‘অটোবায়োগ্রাফি’ বুসান চলচ্চিত্র
উৎসবের ২৮তম আসরের প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে। আগামী অক্টোবরে এই উৎসবেই হবে
সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার। এশিয়া থেকে প্রতিষ্ঠিত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য
‘কিম জিসুক’ নামে এই প্রতিযোগিতা
বিভাগে ‘অটোবায়োগ্রাফি’ এ বছর এশিয়ার
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। যার মধ্যে
ফিলিপিনো মাস্টার ফিল্মমেকার ব্রিলান্টে মেন্ডোজা, শ্রীলঙ্কার পাওয়ার হাউস প্রসন্ন
ভিটানেজ, ইন্দোনেশিয়ার ইয়োসেপ অ্যাঙ্গি নোয়েনসহ আরও অনেকে।
‘অটোবায়োগ্রাফি’ নিয়ে পরিচালক
বলেন, আমি নানা রকম গল্প বলার চেষ্টা করেছি। সেগুলোর একেকটা একেক রকমভাবে মানুষকে স্পর্শ
করেছে। অভিনয় কেমন হওয়া উচিত, কোন গল্প বলা জরুরি- এসব নিয়ে সারাক্ষণই নিরীক্ষা করার
চেষ্টা করেছি। কিন্তু যে কাজটা কখনোই করার চেষ্টা করিনি, সেটা হলো অভিনয়। প্রথম দিকে
এটা নিয়ে আমার মধ্যে ইতস্ত ভাব থাকলেও তিশা আমাকে একটা কথা বলে আমার সংশয় দুর করে দেয়।
‘ও (তিশা) বলে,
এই গল্প তুমি জীবনে একবারই করতে পারবে। করে ফেলো, প্লিজ!’
ক্যামেরার পেছন থেকে সামনে- কেমন লাগছে
জানতে চাইলে ফারুকী বলেন, অভিনয় তো একটা ভালনারেবল কাজ। আর এই গল্পে অভিনয় তো আরো ভালনারেবল
ব্যাপার যেখানে নিজের জীবনও কোনো না কোনো আঙ্গিকে লুকিয়ে আছে। তবে শুটিং শুরু হয়ে
যাওয়ার পর তেমন কোনো আলাদা অনুভূতিই হয়নি। মনে হয়েছে, এটাইতো স্বাভাবিক। শুধু একটা
জিনিস অবশ্য আলাদা ছিলো। শটের সময় মনিটরে থাকা হতো না। আমার ছোট ভাই কিবরিয়া মনিটরে
থাকতো। আর আমি শট শেষে গিয়ে প্লে-ব্যাক করতাম।
সহধর্মিণী যখন সহশিল্পী সেক্ষেত্রে তার
কাছ থেকে অভিনয় শেখা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে ফারুকী বলেন, অভিনয় শেখার ব্যাপার বলতে
পারব না। কারণ পরিচালক তো সবার আগে দেখতে পায় চরিত্রটা কিভাবে হাঁটে, কথা বলে, কি ভাবনা
চিন্তা করে! ফলে এই চরিত্র কি করবে না করবে সেটা জানতামই। কিন্তু একটা ব্যাপার তো নিশ্চিত-
সহশিল্পী যদি অসাধারণ কেউ হন তাহলে অভিনয় সহজ হয়ে যায়। সহশিল্পী তার মান দিয়ে অন্য
শিল্পীর মানও ওপরে তুলে নিয়ে যেতে পারেন।
দর্শকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এতো বছরের
ক্যারিয়ারে কয়েকটা প্রজন্মের ভালোবাসা পেয়েছি। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এই সিনেমাটা
আমার আর তিশার সবচেয়ে পারসোনাল স্টোরি। আপনাদের ভালো লাগলে বা ভাবালে খুশী হবো।
‘অটোবায়োগ্রাফি’ সিনেমায় মোস্তফা
সরয়ার ফারুকী-নুসরাত ইমরোজ তিশা একসঙ্গে অভিনয় করার পাশাপাশি চিত্রনাট্যে লেখার কাজটিও
করেছেন দুইজন মিলে। তিশার জন্য চিত্রনাট্য লেখার কাজটা প্রথমবারের মতো হলে কাজটি সে
বেশ আনন্দ নিয়েই করেছেন বলে জানান।
মাতৃত্বের পর এই সিনেমা দিয়েই নুসরাত ইমরোজ
তিশা কাজে ফেরা। তিনি বলেন, ইলহাম হওয়ার পর এত তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে পারব এটা
ধারণা ছিল না। থ্যাংকস টু ফারুকী! ও আমাকে সেই আত্মবিশ্বাসটা দিয়েছে যে আমি আবার ফিট
হয়ে কাজ করতে পারবো। ইলহাম হওয়ার পর এমন ইমোশনাল গল্পে আমি কাজ করতে পেরেছি সেটার
জন্য আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি।
ফারুকীর সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল
জানিয়ে তিশা বলেন, ফারুকী খুব ভালো ডিরেক্টরের সাথে সাথে উনি ভালো একজন অভিনেতা আগে
থেকেই ছিল। কিন্তু সেটা ক্যামেরার পেছনে ছিল। এখন সেটা সবার সামনে চলে আসলো আর কি।
এখন একটু ভয় লাগছে। অন্য ডিরেক্টর যদি ওকে নিয়ে কাজ শুরু করে, ও যদি নায়ক হয়ে যায়
তখন কি হবে? বলেই হাসতে থাকেন তিনি।
দর্শকদের জন্য তিশা বলেন, যেকোনো সিনেমা
নিয়েই তো একজন আর্টিস্টের অনেক এক্সপেক্টেশন থাকে। আমারও আছে। বরং আমার এই এক্সপেক্টেশন
অনেক বেশি। যেহেতু এটা আমাদের জীবনে অনেক স্পেশাল সিনেমা। আমার বিশ্বাস দর্শকরা ফিল্মটা
দেখে হাসবে, কাঁদবে, কখনো রেগে যাবে, কখনো শান্ত হয়ে চিন্তা করবে এবং অনেক অনেক ভালোবাসা
দিবে।
মন্তব্য করুন