মেসির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষের ঘোষণা রোনালদোর
![লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পুরোনো ছবি](https://www.dhakawave.com/featured_image/f1694070103.jpg)
লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পুরোনো ছবি
ফুটবল মাঠে এক দশকের বেশি সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। সেই যে ২০১৮ সালে রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে জুভেন্টাসে যোগ দিলেন, দুজনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসলে তখনই শেষ হয়ে গিয়েছিল। তার পর থেকেই যে দুই তারকা ভিন্ন ভিন্ন লিগে খেলছেন। আর কালে কালে দুজনের বয়সও তো কম হলো না!
মেসির ৩৬ চলছে, রোনালদোর ৩৮। ক্যারিয়ারের
শেষটা দেখতে পাচ্ছেন দুজনই। এখন আবার কিসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা! পর্তুগিজ কিংবদন্তি অন্তত
এমনই মনে করেন। পর্তুগালের সংবাদমাধ্যম ‘রেকর্ড’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে
রোনালদো তাই বলেছেন, মেসির সঙ্গে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর্দা নেমেছে। তবে দুজন মিলে
‘ফুটবলের ইতিহাস
পাল্টেছেন’ বলেও মনে করেন রোনালদো।
ফুটবলের ইতিহাসে মেসি-রোনালদোর মতো ব্যক্তিগত
দ্বৈরথ আর দেখা যায়নি। লা লিগায় রিয়াল ও বার্সেলোনার হয়ে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে
তুলেছিলেন মেসি-রোনালদো। দুজনে মিলে বর্ষসেরার পুরস্কার জিতেছেন মোট ১২ বার। বর্তমান
সময়ের ফুটবলারদের মধ্যে মেসি-রোনালদোই পেশাদার ফুটবলে ৮০০–এর বেশি গোল করেছেন।
শুধু কী তাই, প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচে নিজেদের নিংড়ে দুজনে মিলে মোট ৭৯টি ট্রফিও জিতেছেন।
এক দশকের বেশি সময় ধরে সেরা ফুটবলারের প্রশ্নে পৃথিবী ভাগ হয়েছে দুই ভাগে—এক ভাগে মেসি,
আরেক ভাগে রোনালদো। কিন্তু সেসব দিন পেছনে ফেলে এসেছেন ইউরোপ মাতিয়ে গত জানুয়ারিতে
সৌদি প্রো লিগের দল আল নাসরে যোগ দেওয়া রোনালদো। মেসিও ইউরোপ ছেড়েছেন গত জুলাইয়ে। আর্জেন্টাইন
তারকা এখন ইন্টার মায়ামির হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে।
রোনালদো জানিয়েছেন, মেসিকে আর প্রতিদ্বন্দ্বী
হিসেবে দেখেন না, ‘আমি বিষয়টি এভাবে দেখি না। দুজনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা
শেষ হয়েছে। এটা ভালোই ছিল, দর্শকেরা পছন্দ করতেন। রোনালদোকে যাঁরা পছন্দ করেন তাঁদের
মেসিকে ঘৃণা করতে হবে না। কিংবা এর উল্টোটা। আমরা ভালোই করেছি, ফুটবলের ইতিহাস পাল্টেছি।
গোটা বিশ্বেই আমাদের সম্মান করা হয় এবং এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
ইউরো বাছাইপর্বে পর্তুগালের
প্রতিনিধিত্ব করতে এখন জাতীয় দলের সঙ্গে আছেন রোনালদো। মেসির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সে তার পথ অনুসরণ করেছে, আমি আমারটা করেছি। সেটা ইউরোপের
বাইরে হলেও সমস্যা নেই, কারণ, সে তার জায়গায় ভালো করছে, আমিও আমার জায়গায় ভালো করছি।
আমি আসলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ওভাবে দেখি না। আমরা অনেকবারই মঞ্চ ভাগ করেছি। সেটা প্রায়
১৫ বছর। আমরা বন্ধু তা বলছি না। কখনো তার সঙ্গে ডিনার করতে বসিনি। পেশাদার দৃষ্টিকোণ
থেকে আমরা সহকর্মী এবং একে অপরকে সম্মান করি।’
ইউরোপ ছাড়ার পরও শিরোপা জিতে চলছেন মেসি–রোনালদো। মায়ামির হয়ে লিগস কাপ জিতেছেন মেসি। রোনালদো আল নাসরের হয়ে জিতেছেন আরব ক্লাব চ্যাম্পিয়নস কাপ। এর পাশাপাশি একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ৮৫০ গোলের কীর্তিও গড়েছেন রোনালদো, ‘এটা ঐতিহাসিক মাইলফলক। যেসব রেকর্ড গড়েছি, সবই আমার গর্বের উৎস এবং কখনো ভাবিনি যে এসব অর্জন করতে পারব না। কিন্তু আমি আরও অর্জন করতে চাই। যেহেতু খেলার মধ্যেই আছি তাই মানদণ্ডটা আরও উঁচুতে স্থাপন করতে হবে। আমাকে আরও বড় কিছু ভাবতে হবে।’
মন্তব্য করুন