এই জীবনে নানার মতন কেউ আমাকে ভালোবাসে নাই : পরীমনি
সন্তান রাজ্যর ১১ মাস পূর্তিতে পরীমনি ও তার নানা শামসুল হক
চিত্রনায়িকা পরীমনির নানা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক শামসুল হক গাজীর মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পার হয়েছে। ছোটবেলায় মা-বাবা হারানো পরীমনিকে এই মানুষটি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা দিয়েছেন।
শনিবার সকালে ফেসবুকে পরীমনি লিখেছেন,
‘এই জীবনে আমার
নানার মতন কেউ আমাকে ভালোবাসে নাই আর।’
মাঝে বেশ কিছুদিন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন ছিলেন পরীমনির নানা। ওই সময়ে নানাকে নিয়ে বেশ আতঙ্কিত ছিলেন নাতনি। কখন
কী হয়ে যায়—এসবে দিশাহারা ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার
পর মারা যান ঢালিউড তারকার নানা। তবে বিপর্যস্ত ও দিশাহারা পরীকে সব রকম কঠিন পরিস্থিতিতে
মানিয়ে নেওয়ার একটা অদ্ভুত শিক্ষা দিয়ে গেছেন তার স্কুলশিক্ষক নানা, এমনটাই জানিয়েছেন
তিনি।
পরীমনি তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ হয়তো এই পরিবারের
সবার থেকে ভেঙে পড়ার কথা ছিল আমার। কিন্তু আমার নানা আমাকে সবার বটগাছ করে দিয়ে গেছে।
এর থেকে বড় কোনো শোক আমার আর আসবে না। যদি আসে সব শোক সহ্য করার ক্ষমতা আল্লাহ আমাকে
দিবেন এটা আমার নানুর দোয়া। কত ভাগ্যে আমি আমার নানুর সাথে তার শেষ কলেমা পড়তে পেরেছি!
আহা নানুভাই কত সান্ত্বনায় রেখে গেল আমাকে।’
পরীমনির নানা শামসুল হক গাজীকে পিরোজপুর
মঠবাড়িয়ার পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। ওই একই স্থানে পাশাপাশি আরও দুটি
কবরে চিরঘুমে আছেন পরীমনির মা ও নানি।
ফেসবুকে কয়েকটি স্থিরচিত্র পোস্ট করে পরীমনি
লিখেছেন, ‘এই কবরস্থানে এখন তিনটা কবর। প্রথমটা আমার মায়ের। তারপর
নানি আর এই যে আমার জানের মানুষটার কবর। নানু মরে যাওয়ার আগে নিজেকে আমার এতিম লাগে
নাই কোনো দিন। এই জীবনে আমার নানার মতন কেউ আমাকে ভালোবাসে নাই আর।’ সবশেষে পরীমনি
লিখেছেন ‘জীবন সুন্দর।
মৃত্যু যে বড় সুন্দর…।’
মাত্র তিন বছর বয়সে মা হারানোর পর পিরোজপুরে
নানা শামসুল হক গাজীর কাছেই বেড়ে ওঠেন পরীমনি। নানার তত্ত্বাবধানে থেকেই তিনি এসএসসি
ও এইচএসসি পাস করেছিলেন। মা-বাবার স্নেহ পরীমনি তার নানার কাছেই পেয়েছেন। সব বন্ধন
ছিন্ন করে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার পর চিরঘুমের দেশে পাড়ি জমিয়েছেন পরীমনির
নানা শামসুল হক গাজী।
নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়ে
দিশাহারা, বিপর্যস্ত ঢালিউডের আলোচিত এই তারকা। শামসুল হক গাজী পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার
মানুষ। স্কুলশিক্ষক মানুষটি এলাকার সবার কাছে সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত। নিজের প্রতিষ্ঠা
করা স্কুলে গতকাল বাদ জুমা তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এই স্কুলের তিনি প্রধান শিক্ষক
ছিলেন।
মন্তব্য করুন