গত অর্থ বছরে ফেসবুকের মালিক মার্ক জাকারবার্গের সুরক্ষার জন্য মোট ২৩.৪ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমান দুই শত কোটি টাকারও বেশি। ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়াল এমন পিলে চমকানো তথ্য দিয়েছে।

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নথি অনুসারে ফেসবুক জানিয়েছে, জাকারবার্গের ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য প্রায় ১৩.৪ মিলিয়ন ডলার এবং অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যয় কাটাতে অতিরিক্ত ১০ মিলিয়ন ডলার ট্যাক্স ভাতা দেওয়া হয়েছে সংস্থাটিকে।

এই বিপুল পরিমানে অর্থ ব্যয় হয়েছে জাকারবার্গের নিরাপত্তাকর্মীদের বেতন, সরঞ্জাম কেনা, নিরাপত্তা সেবা নেওয়া ও আবাসনের উন্নয়নের পেছনে। শুধু জাকারবার্গ নন, তার পরিবারের বাকি সদস্যদের নিরাপত্তা ব্যয়ও বহন করে ফেসবুক। এর নিরাপত্তা কার্যকর থাকে দেশে-বিদেশে সর্বত্র। গত বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে তার নিরাপত্তা ব্যয়ের অঙ্ক অনেকটাই বেশি বেড়েছে।

আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় মেনলো পার্কে মার্ক জাকারবার্গের অফিস। সেখানেই অন্য কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করেন তিনি। অন্য কর্মীদের মতো জাকারবার্গের ডেস্কও খোলা, বদ্ধ কিউবিকল নেই তাঁর। অন্যদের সঙ্গেই তিনি বসেন। তবে তাঁর পাশে দেহরক্ষী থাকে। মেনলো পার্কের জুকারবার্গের ওই অফিসের নীচেই আছে গাড়ি রাখার জায়গা। কিন্তু গাড়িবোমার ঝুঁকির কারণে কেউ জুকারবার্গের বসার জায়গার ঠিক নীচে গাড়ি রাখতে পারেন না।

অফিসের বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে হয় এ ধরকুবেরকে। এমনিতে খুব সাদামাটাভাবেই তার চলাচল। সাধারণত ছাই রঙের টি-শার্ট ও ট্রাউজার্স পরেই দিব্যি চলে আসেন অফিসে। তবে পোশাকের বিষয়ে মাথা না ঘামালেও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে এখন বেশ উদ্বেগ বেড়েছে তার। তাই অফিস থেকে যাতে জরুরি প্রয়োজনে বের হতে পারেন, সে কারণে গোপন সুড়ঙ্গও তৈরি করা হয়েছে। এ অবশ্য নতুন নয়। বিশ্বের সব বড় বড় প্রতিষ্ঠানের অনেক কর্মকর্তাই নিজেদের চারপাশে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা মোতায়েন করেন।

জানা গেছে, জাকারবার্গ বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে নানা রকম উপহার পান সারা বছর ধরে। কিন্তু কোনও উপহার তিনি নিজের হাতে খোলেন না। জাকারবার্গের কাছে কোনও কিছু পৌঁছতে হলে তার আগে নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়। সেখানে পাশ করলেই তা আসে তার কাছে। তিনি কোনও রেস্তোরাঁ বা বারে গেলে তার নিরাপত্তারক্ষীরা আগে গোটা জায়গাটা তল্লাশি করেন। জাকারবার্গের সংস্পর্শে আসা কোনও চিকিৎসক বা প্রশিক্ষককেও নিরাপত্তার বলয় পেরিয়েই আসতে হয়।

নথি অনুসারে ২০১৫ সালের পর থেকেই জাকারবার্গের নিরাপত্তার খরচ বেড়েই চলেছে। ২০১৫ সালে তার নিরাপত্তার জন্য প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালে এ খাতে ব্যয় বেড়ে হয় ৯ মিলিয়ন ডলার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ মিলিয়ন ডলারে।