বুধবার, ৮ মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্মৃতিতে নববর্ষ

ইকবাল হাসান
১৪ এপ্রিল ২০২১ ২১:৪০ |আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২১ ১৮:২৭
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

এবার রং-বেরংয়ের ফেস্টুনে সাজেনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ, বসেনি বৈশাখী চত্বরে বিভিন্ন বিভাগের স্টল, নেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের কোনো উদ্যোগ।

বাংলা সৌর ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস বৈশাখের প্রথম দিনটি নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ হিসেবে পরিচিত সবার মাঝে। এই বছর ১৪২৮-এ পা দিয়েছি আমরা। কিন্তু কোনো উৎসব ছাড়াই নীরবে কেটে গেল দিনটি। স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা ও রমনা বটমূলে ছায়ানটের গান দিয়ে পহেলা বৈশাখের আয়োজন শুরু হতো। এবার সেটাও হচ্ছে না। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও নানারকম আয়োজন করা হতো। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ও এর ব্যতিক্রম ছিলো না। তবে, করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় এবার নেই এর কিছুই।


এবার রং-বেরংয়ের ফেস্টুনে সাজেনি ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ, বসেনি বৈশাখী চত্বরে বিভিন্ন বিভাগের স্টল, নেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের কোনো উদ্যোগ।


ক্যাম্পাসে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে বাংলা বিভাগের তাওহীদ সানি বলেন, এখন পর্যন্ত একটি মাত্র পহেলা বৈশাখ পেয়েছি আমরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে শুরু করে বৈশাখী চত্বর পর্যন্ত নানারকম ব্যানার-ফেস্টুনে সাজানো হয়েছিলো সেদিন। পুরো ক্যাম্পাসের চেহারাই বদলে গিয়েছিলো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা করার পর বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাক শাড়ি, লুঙ্গি পরে একটি র‍্যালি করে বিভাগের শিক্ষকদের নেতৃত্ত্বে। এ র‍্যালি এক উৎসব মুখর পরিবেশের আমেজ দিয়েছিলো সেদিনের উত্তপ্ত গরমে। এছাড়া বিভাগের পক্ষ থেকে পান্তা ভাত ও মাছ ভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল।


তিনি আরো বলেন, বৈশাখী চত্বরকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ টি ডিপার্টমেন্ট ও বিভিন্ন সংগঠনের স্টল বসেছিলো শিক্ষার্থীদের বানানো বিভিন্নরকম মুখরোচক খাবারে। ক্রেতা হিসেবে আসা শিক্ষক ও আমাদের অগ্রজদের পদচারনায় মুখরিত ছিলো স্টলগুলো। এ মুহূর্ত বারবার ফিরে পেতে চাই।


বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা অন্যান্য সেশনের শিক্ষার্থীদের মতো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন এখন পর্যন্ত উপভোগ করতে পারেনি। তারা  ক্যাম্পাসে এখন পর্যন্ত পায়নি কোন উৎসব। এ বিষয়ে আক্ষেপ করে ২০১৯-২০ সেশনের সাজিদুর রহমান অন্তর বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে এখন পর্যন্ত কোন পহেলা বৈশাখ পাইনি। করোনার বন্ধেই আমাদের পহেলা বৈশাখ কেটে গিয়েছিল আগেরবার। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় ভেবেছিলাম হয়তো এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারবো কিন্তু করোনা আবারো হানা দিয়েছে। আরেকটি নববর্ষ উদযাপন করা হলো না ক্যাম্পাসে!


এবার নববর্ষের সাথে একই দিনে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সিয়াম সাধনার মাস রমজান শুরু হয়েছে। এর আগে এরকম রমজানও পায়নি শিক্ষার্থীরা। প্রতি বছর রমজানের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা উপলক্ষ্যে কিছু শিক্ষার্থী প্রথমদিকে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতেন। সে সময় ক্যাম্পাসের কাঁঠাল তলা, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বসে মাগরিবের আজানের সাথে সারাদিনের রোজা ভাঙতেন শিক্ষার্থীরা। সে রোজার স্মৃতি হাতড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, রমজানে বিভাগের পরীক্ষার কারনে থাকা হয়েছে বেশ কয়েকবার। সে সময় বন্ধুরা মিলে অনেকবার একসাথে ক্যাম্পাসে ইফতার করেছি। এছাড়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন ইফতারের আয়োজন করতো। এ মুহূর্ত অনুজরা পাচ্ছে না। আশা করি তার সামনে পাবে।



মন্তব্য করুন