শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রিকশা থামিয়ে যুবককে হেনস্তা : ৩ পুলিশ সদস্যকে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ এপ্রিল ২০২১ ১৪:৫৭ |আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২১ ০৩:৪৫
পুলিশের সঙ্গে যুবকের ধস্তাধস্তি। ছবি: ভাইরাল হওয়া ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট।
পুলিশের সঙ্গে যুবকের ধস্তাধস্তি। ছবি: ভাইরাল হওয়া ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট।

লকডাউন চলাকালীন ফেনী শহরের ট্রাংক রোডের মডেল হাইস্কুলের সামনে রিকশা থেকে নামিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হাতকড়া পরিয়ে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় এসআইসহ তিন পুলিশ সদস্যকে শোকজ করেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাতে ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) যশমন্ত মজুমদারসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে শোকজ করে মঙ্গলবার তাদের ঘটনার কারণ দর্শাতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী।

 

লকডাউনের ৫ম দিন গত রবিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে পুলিশের সঙ্গে সেই যুবকের বাগ্‌বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। পরে এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিলো। ওই যুবক ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন

 

ছড়িয়ে পড়া ৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের সেই ভিডিওটিতে দেখা যায়, মাস্কবিহীন এক যুবক রিকশাযোগে শহরের ট্রাংক রোডের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ফেনী মডেল স্কুলের সামনে আসার পর মডেল থানার দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) যশোমন্ত মজুমদারসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তার রিকশা থামান। ওই যুবক গতিরোধ করার কারণ জানতে চান।

 

এসময় ওই যুবক চিৎকার করে বলতে থাকেন, অন্য রিকশা ছেড়ে দিছস। আমার রিকশা কেন ধরা হয়েছে? এ কথা বলার পর পুলিশ সদস্যরা তাকে কলার ধরে টেনে রিকশা থেকে নিচে নামান। ফলে ওই যুবক আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে গালমন্দ করতে থাকেন। এ সময় পুলিশ তাঁকে পাগল হিসেবে আখ্যায়িত করে। সে যুবক তাকে পাগল বলার কারণ জানতে চান।

 

পরে পুলিশ তার হাতে হাতকড়া লাগানোর চেষ্টা করলে চার পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখন ওই যুবক বারবার বলতে থাকেন, এ দেশ কি পুলিশের দেশ? এ সময় হাতকড়া লাগাতে না পেরে এক পুলিশ সদস্য তাকে পিঠমোড়া করে রাস্তায় চেপে ধরলে সড়কের আশপাশে থাকা লোকজন উচ্চ স্বরে হইচই করতে থাকেন। হাতকড়া লাগানোর পর ওই যুবক দাঁড়িয়ে পুলিশকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।

 

ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী বলেন, লোকটি মানসিক ভারসাম্যহীন। পুলিশ কর্তব্য পালনকালে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পুলিশের উপর ক্ষেপে যায় এবং মারতে আসে। তখন পুলিশ আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে। তার গায়ে হাত তোলা পুলিশের উদ্দেশ্য নয়।

 

পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী আরও বলেন, ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) যশমন্ত মজুমদারসহ ঘটনার সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ঘটনার কারণ দর্শাতে মঙ্গলবার তাদের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। তাদের বক্তব্য শোনার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এদিকে ওই যুবকের বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর হায়দার জানান, আটক যুবকের নাম শহিদুল। তার মানসিক সমস্যা রয়েছে। থানা হেফাজতে নেওয়ার পর জানা গেছে ওই যুবক কিছুদিন পরপর নাকি ভাইরাল হতে চায়। তাকে হাজতখানায় রাখার পর চিৎকার করে সবাইকে অস্থির করে তোলেন তিনি। একপর্যায়ে তার স্বজনদের ডেকে আনলে তারা তার মানসিক সমস্যার কথা জানায়। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।



মন্তব্য করুন

সর্বশেষ খবর
এই বিভাগের আর খবর