মুনিয়ার ‘হত্যাকারীকে’ দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি
মানববন্ধন কর্মসূচি
রাজধানীর শুলশানের একটি ফ্লাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়া নামে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে তাদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন পালন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার
(৪ মে) দিনাজপুর জেলা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে জেলা সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির
আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে
বক্তারা বলেন, ‘আমাদের মুনিয়া নামের মেয়েটিকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা
হয়েছে,
মেয়েটির চরিত্র হনন করা হচ্ছে। আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য
করছি যখন কোন নারী নির্যাতনের শিকার হয়, ধর্ষিত হয় তখন হত্যাকারীকে দোষারোপ না করে নারীকে বেশ্যা বানানোর চেষ্টা করা
হয়। দিনাজপুরের ইয়াসমিনের ব্যাপারেও তা করা হয়ে ছিল।
আজকে
দুটি জিনিস সবচেয়ে সামনে এসেছে। একটি দেশের সাংবাদিক সমাজ। আমরা সাংবাদিক সমাজের
কাছে অনুরোধ করি-আমরা যখন বিপদে পড়ি, অসহায় হয়ে যাই। তখন সাংবাদিকদের কাছে ছুটে আসি। কারণ শেষ ভরসার স্থল হলো এই
সাংবাদিক সমাজ। সাংবাদিক সমাজেই সত্যকে উদঘাটন করে এবং বিচারের জন্য বাধ্য করে।
কিন্তু মুনিয়া ইস্যুতে সাংবাদিকদের আচরণ সারা জাতিকে হতবাক করেছে। কারণ সাংবাদিকরা
মুনিয়ার পক্ষে তো লেখেননি বরং মুনিয়ার চরিত্র হনন করার চেষ্টা করেছেন। সাংবাদিকদের
উপর আমরা আস্থা বিশ্বাস রাখি, আমরা বিশ্বাস
করি যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে সাংবাদিক সমাজ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ
করে অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।’
দিনাজপুর
সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক মো. সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তারা আরও বলেন, ‘বর্তমান সময়ে নারী নির্যাতন
হত্যার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তা যেমন পাশবিক
তেমনি ভয়াবহ। নারী নির্যাতনের ঘটনা সভ্য সুস্থ বিবেকবান মানুষকে বাক রুদ্ধ করে
দিচ্ছে।
পাশবিক
নির্যাতনের শিকার নারীর জীবনে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার ভুলণ্ঠিত হচ্ছে। অপর দিকে
সমাজে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায় হত্যাকারী। অর্থের জোরে, সামাজিক প্রতিপত্তি খাটিয়ে, পুলিশ-প্রশাসনকে হাত করে ফেলে। মানুষেরা যদি হত্যার শিকার ও নির্যাতিতদের পাশে
এগিয়ে না আসে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা যদি অর্থের জোরে
প্রতিপত্তিতান্ত্রিকতা থেকে বের হয়ে না আসে, তাহলে দোষীদের ধরা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা কখনই সম্ভব নয়।’
বক্তারা আরও
বলেন,
‘এখন একমাত্র ভরসারস্থল হলো
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার উপর দেশের মানুষের আস্থা আছে। আমরা আশা
করছি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুনিয়ার
হত্যাকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবেন।’
মানববন্ধনে
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর নাট্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউর
রহমান রেজু, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য
সচিব ড. মারুফা বেগম, মহিলা পরিষদের
সভাপতি কানিজ রহমান, সচেতন নাগরিক
কমিটির সভাপতি জলিল আহমেদ, সিপিবির সাধারণ
সম্পাদক বদিউজ্জামান বাদল।
এছাড়া
আরও বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ
সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সম্মিলিত
সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সুলতান কামাল উদ্দিন বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লাহ রহমত, সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক তারেকুজ্জামান তারেক, মহিলা পরিষদের সদস্য শুক্লা সাহা প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা
করেন মহিলা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবিনা আক্তার।
মন্তব্য করুন