গোপালগঞ্জে করোনার মধ্যে ডায়রিয়াসহ পেটের পীড়ার প্রকোপ
স্থান সংকুলন না হওয়ায় বাধ্য হয়ে রোগীদের হাসপাতালের মেঝে, বারান্দায় শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানকার নদী ও খালের পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং প্রচণ্ড গরমের কারণে প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন। এসব রোগীকে চিকিৎসা দিতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বিছানা সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তাদের হাসপাতালের মেঝে, বারান্দায় শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আক্রান্ত রোগীরা বেশির ভাগই গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (৪ মে) সরেজমিন গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘুরে জানা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১২টি বেড থাকলেও রোগী রয়েছেন মোট ৩২ জন। এ হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে ৩০০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এ ছাড়া বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও প্রায় ১৩০ জন। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালটিতে শয্যার অপ্রতুলতার কারণে বাধ্য হয়ে রোগীরা মেঝেতে অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া জেলার কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া, মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও প্রায় ১৫০ জনের অধিক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার অসিত কুমার মল্লিক বলেন, ‘প্রতি বছর এপ্রিল ও মে মাসে ডায়রিয়াজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এ সময় প্রচণ্ড গরম ও গোপালগঞ্জের নদীতে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে। নদীতীরবর্তী বা গোপালগঞ্জ শহরের মানুষই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছি। তবে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে তাদের জন্য পর্যাপ্ত স্যালাইন এবং শয্যার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না।’
জেলার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহম্মেদ বলেন, ‘নোনা পানির কারণে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা ডায়রিয়া, পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ বিষয়ে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করার চেস্টা চালাচ্ছি।’
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফইজুর রহমান বলেন, ‘নদীর স্যালাইনিটি (লবণাক্ততা) বেড়েছে দেখা যাচ্ছে। উজান থেকে পর্যাপ্ত পানি না আসলে নদীর পানির উচ্চতা কমে যায়। পাশাপাশি সমুদ্রের পানিটা নদীতে চলে আসলে লবণাক্ততা বেড়ে যায়। এবার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতও হয়নি। এই কারণেই লবণাক্ততা বেড়েছে।’
মন্তব্য করুন