বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শৈশবের ঈদ আনন্দ এখন শুধুই স্মৃতি

মো. মেহেদী হাসান, জবি
১৩ মে ২০২১ ২১:৪৬ |আপডেট : ১৩ মে ২০২১ ২৩:২৪
কোনও এক ঈদে বন্ধুদের সঙ্গে লেখক।
কোনও এক ঈদে বন্ধুদের সঙ্গে লেখক।

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। কয়েকবছর আগে যখন রোজা থাকতাম না, তবুও ইফতারের আগে বসে পড়তাম ইফতার নিয়ে। বাবা, মা, দাদী রোজা থাকার কারণে আজানের অপেক্ষা করতো। আর আমি তো আগেই খাওয়া শুরু করতাম। তখনও বুঝিনি ইফতারের যথার্থ মর্ম। কিন্তু এখন বুঝতে শিখেছি এবং রোজা রাখতে শিখেছি।

কি সুন্দর ছিলো তখনকার সেই ছেলেবেলা। এখনও মনে পড়ে ঈদের কিছুদিন আগে থেকে শুরু হয়ে যেতো শাহজাদী মেহেদী কেনার ধুম। তখন বাজারে মেহেদী বলতে শুধু শাহজাদী নামেরই মেহেদী ছিলো। তাই তখন মেহেদী বলতে শুধু শাহজাদী মেহেদীই বুঝতাম। এখন বুঝেছি সেটি ছিলো শাহজাদী ব্রান্ডের। এখন অবশ্য বাজারে নানান ধরনের নানান ব্রান্ডের মেহেদী পাওয়া যায়। কিন্তু তবুও এখনও লোকমুখে শাহজাদী মেহেদী নামটাই শোনা যায়।

এইতো সেদিন ২৯তম রোজার ইফতার শেষ হতে না হতেই দৌড়ে যাই বাড়ির কাছেই ফাঁকা মাঠটিতে, যেখানে পশ্চিম দিগন্তে সূর্য ডুবে যায়। সেদিন সেখানে আমি একা আসি নি। আমার মতো অনেকেই এসেছে। কারণ একটিই, আর তা হলো ঈদের চাঁদ দেখতে পাওয়া গেল কি না। তখন তো আর এখনকার সময়ের মতো বাড়িতে বাড়িতে কিংবা গ্রামে গ্রামে টেলিভিশন ছিলো না।

বিদ্যুৎ, টেলিভিশন সবই প্রায় কয়েকবছরের মধ্যে এসে গিয়েছিলো। সাদাকালো টিভিতে বিটিভি এবং ভারতের একটি চ্যানেল দেখা যেত। ঈদের চাঁদ দেখা গেল কি না তা তখন টিভিতেই জানতে পারতাম। চাঁদ দেখা গেলে শুরু হয়ে যেত ঈদের আগের দিনের অনুষ্ঠানগুলো। আর আমরা অপেক্ষা করতাম কখন বেজে উঠবে ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ

আর সেদিন থেকেই শুরু হয়ে যেত ঈদ সালামি নেওয়া। তখন আমাদের সালামি দেওযা হতো দুই টাকা, পাঁচ টাকা কিংবা খুব বেশি হলে দশ টাকা। এর বেশি কেউ অবশ্য আশাও করতো না। ঈদের দিন পর্যন্ত চলতো সালামি নেওয়ার উৎসব। শেষে ভাই বোনরা মিলে হিসাব করতাম কার কত বেশি সালামি পাওয়া হয়েছে। যার বেশি হতো তার আনন্দের সীমা ছিলো না।

সব ঘটনাই ছিলো শৈশবের ঘটনা। সময় বয়ে যায়। ঘটনা প্রবাহের তার চিত্র পরিবর্তন করে। শৈশবের সেই ঈদ আনন্দ আর বর্তমান সময়ের ঈদ আনন্দের মাঝে এখন বিস্তর ফারাক। অনুভূতিগুলো বেশ বৈচিত্র্যও বটে। করোনাকালীন লকডাউনে সেই পরিবর্তনটা বোধহয় অনেকটু বেশি। যার ফলে এখন ঈদের দিনটিও অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতোই মনে হয়।

লেখক-

শিক্ষার্থী

প্রথম বর্ষ, গণিত বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়



মন্তব্য করুন