শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘ধীরে ধীরে’ উন্নত হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৪ মে ২০২১ ২৩:১৩ |আপডেট : ১৬ মে ২০২১ ০২:০৩
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পুরোনো ছবি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পুরোনো ছবি

বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি ‘ধীরে ধীরে’ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শুক্রবার ঈদের দিন বেলা সাড়ে ১১টায় জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পনের পরে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের একথা জানান।

তিনি বলেন, ‘আলহামুলিল্লাহ ম্যাডাম অতি ধীরে ধীরে হলেও তিনি ইম্প্রুভ করছেন। বেশ ইম্প্রুভ করেছেন ইতিমধ্যে। তবুও তার ডাক্তার সাহেবরা কালকেও (বৃহস্পতিবার) আমাকে বলেছেন যে, “স্টিল হার কনডিশন ইজ ক্রিটিক্যাল”, এখনো ক্রিটিক্যাল রয়েছে। তবে অনেকগুলো বিষয়ে তার উন্নতি হয়েছে এবং তারা (ডাক্তাররা) খুব আশাবাদী অতি শিগগিরই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।’

এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে তার চিকিৎসা চলছে।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খানকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের করব জিয়ারত শেষে করে বিএনপি মহাসচিব একা এভারকেয়ার হাসপাতালে যান, কিছুক্ষণ থেকে চলে যান।

খালেদা জিয়া সিসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকায় চিকিৎসকরা হাসপাতালে কাউকে না আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। ফলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার নিকট স্বজনরাও কেউ আসেননি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিকিৎসকদের অনুরোধে যেহেতু দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ নেই সেজন্য নিকট স্বজনরা বাসায় বসে খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া-দরুদ পড়ছেন। গুলশানে ‘ফিরোজায়’ থাকাকালে গত বছরের দুই ঈদে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করলেও এবার হচ্ছে না বলে সাংবাদিকদের জানান বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘এবার আমাদের দেখা করার সম্ভাবনা কম। কারণ ডাক্তারদের বারণ আছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে দুই মামলায় সাজা নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান খালেদা জিয়া। পুরনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে দুইটি এবং পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিনে দুটি ঈদ উদযাপন করেন তিনি। কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ওইসময়গুলোতে ঈদের দিন আত্বীয় স্বজনরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাদের বাসা থেকে রান্না করে আনা খাবার খাবার খেয়েছেন তিনি।

গত বছর দুটি ঈদই করেছেন গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য়। আত্মীয়-স্বজন ছাড়া শুধুমাত্র দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে দুই ঈদে সাক্ষাত দিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

গত ১৪ করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার পর গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ব্যক্তিগত চিকিতসক টিমের অধীনে চিকিৎসাধীন থাকার পর তাদের পরামর্শে ২৭ এপ্রিল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত ৩ মে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। পোস্ট কোভিড জটিলতায় খালেদা জিয়ার পুরনো রোগ আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিকের পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগার যেতে হয়েছিলে ৭৬ বছর বয়েসী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়; শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় একরকম কোয়ারেন্টাইনের মধ্যে ছিলেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ ছিলো একেবারেই সীমিত।



মন্তব্য করুন