হাতের টানে ওঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ
হাতের টানে ওঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ
নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক নির্মাণ করায় কাজ শেষ হওয়ার আগেই সাতক্ষীরার একটি সড়কের কয়েকটি অংশের পিচের ঢালাই উঠে যাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তদারকি না করার কারণেই এই অনিয়ম হওয়ার সুযোগ হয়েছে। তবে এলজিইডি বলছে, গরমের কারণে রাস্তার এ অবস্থা হতে পারে। প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কী সমস্যা খুঁজে বের করা হবে।
গত শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিবপুর
ইউনিয়নের গোদাঘাটা বদ্দীপাড়ার মল্লিক বাড়ি থেকে কারিগর পাড়া ঈদগাহ মোড় পর্যন্ত ১
হাজার ৩৬০ মিটার সড়কে এক কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। কাজটি পেয়েছে
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোয়ানি ট্রেডার্স। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে তিন ভাগের দুই ভাগ কাজ।
তবে চলমান এ কাজে উপজেলা প্রকৌশলী বা তার প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে কাজ বুঝে নেওয়ার কথা
থাকলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার করায়
কাজ শেষ হতে না হতেই সড়কের কয়েকটি অংশের পিচের ঢালাই উঠে গেছে। পাথর, বিটুমিনসহ চলমান
সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আবার
গাড়ি চলাচল করায়ও পিচ অনেক জায়গায় উঠে যাচ্ছে।
ঠিকাদারের লোকজন ময়লা-আর্বজনা পরিষ্কার না করে কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন
স্থানীয়রা। তারা আরও অভিযোগ করছেন, কম্প্রেশার মেশিন দিয়ে সড়ক পরিষ্কার করে পিচ দেওয়ার
কথা, তা না করে গাছের পাতা ও ময়লার ওপরই পিচ দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী এক ইঞ্চি ঢালাই
হওয়ার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও আধা ইঞ্চি পিচ ঢালাইও দেওয়া হয়েছে। আর সেসব জায়গারই পিচ
উঠে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সালাম মুন্সী বলেন, পিচ দেওয়ার আগে যখন ইটের
সুরকি দেওয়া হয় তখন রোলার মেশিন দিয়ে সমান করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু রোলার দিয়ে
সমান না করে পিচ দিয়েছে। ফলে কাজ শেষ হওয়ার আগেই পিচ উঠে যাচ্ছে।
নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক
জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, পিচ ঢালাইয়ের কাজ যেভাবে হয়, সেভাবেই আমি সব ধরনের উপাদান
ঠিকভাবে ব্যবহার করেছি। তবে স্থানীয়দের মধ্যে গ্রুপিংয়ের কারণে এ ধরনের অভিযোগ উঠছে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকৌশলী ইয়াকুব আলী জানান, গরমের কারণে
রাস্তার এ অবস্থা হতে পারে। যারা অভিযোগ করছে তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, বিটুমিন কম আছে।
প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সমস্যা খুঁজে বের করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারের কাছ থেকে এখনো কাজ বুঝে নেওয়া হয়নি। তাছাড়া
ঠিকাদারকে কোনো প্রকার বিল দেওয়া হয়নি। কাজ বুঝে নেওয়ার আগে সব সমস্যা সমাধান করেই
বুঝে নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শোয়াইব আহমাদ বলেন, রাস্তার পিচ উঠে
যাওয়ার ঘটনায় খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন