মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাংশায় সরকারি ঘর পেতে কৃষককে গুণতে হয়েছে ৫৮ হাজার টাকা

সৈয়দ মেহেদী হাসান, রাজবাড়ী
২১ জুন ২০২১ ২২:১১ |আপডেট : ২২ জুন ২০২১ ০৪:১৩
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ঘর।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ঘর।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ঘর বিতরণে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) নাসির উদ্দিন গাজির বিরুদ্ধে।

নাসির উদ্দিন গাজি সরকারি ঘর বরাদ্দ দিতে কৃষক মো. ফজলু বিশ্বাসের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। পরে নগদ ২৮ হাজার ৫ শত টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এরপর বাকি অর্থ না দেওয়ায় ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন মেম্বার। এরপর নিজের অর্থে ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন ওই কৃষক। এছাড়াও নাসির উদ্দিন গাজির বয়স্ক ও বিধবা ভাতা কার্ডের জন্যও তিনি ৫০০ টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ হতিয়ে নেন।

কৃষক মো. ফজলু বিশ্বাস বলেন, সরকারি ঘর দেওয়ার জন্য আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন নাসির উদ্দিন গাজি মেম্বার। আমি তাকে নগদ ২৮ হাজার ৫ শত টাকা দিই। পরে আরও টাকা দাবি করেন তিনি। আমি টাকা না দেওয়ায় আমার ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলো। পরবর্তীতে আমি ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করি। এই ঘর পেতে আমার সর্বমোট খরচ হয়েছে ৫৮ হাজার ৫ শত টাকা।

মৌরাট ইউনিয়নের কাজিয়ালপাড়া গ্রামের মৃত মালেকের ছেলে শামীম মন্ডল জানান, প্রায় দেড় বছর আগে সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১১ হাজর ৫ শত টাকা নিয়েছিল ফজলু মেম্বার। তবে ঘর দিতে না পারায় তার টাকা ফেরৎ দিয়েছে।

এছাড়াও অনেকেই ৫ হাজার টাকা করে দিয়েও ঘর না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন নাসির উদ্দিন গাজি মেম্বারের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীরা হলেন- খান্দুয়া গ্রামের মুলান্দি মন্ডলে ছেলে মো. নসির মন্ডল (বাদাম বিক্রেতা), রহিম মন্ডলের স্ত্রী মোছা. কহিনুর খাতুন, মো. তোফাজ্জলের স্ত্রী মোছা.  হাসিনা ও আকাই শেখের ছেলে মো. আকমকল শেখ।

তারা জানান, সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে প্রায় দেড় বছর আগে তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন নাসির উদ্দিন গাজি মেম্বার।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন গাজির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সরকারি ছয়টি ঘর বরাদ্দ পেয়েছি। কারও কাছ থেকে জোরপূর্বক কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। তবে কেউ কেউ খুশি মনে কিছু টাকা দিতে ছেয়েছিলো, তবে তা এখনো পর্যন্ত আমি হাতে পাইনি। আর বয়স্ক ও বিধবা ভাতা কার্ডের জন্য অফিস খরচ বাবদ ৫ শত টাকা করে নিয়েছি।

মৌরাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. হাবিবুর রহমান প্রামানিক বলেন, সরকারি ঘর বরাদ্দের জন্য কারও কাছ থেকে কোন প্রকার অর্থ নেওয়া হয়নি। যদি কেউ গোপনে অর্থিক লেনদেন করে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএন) মোহাম্মাদ আলী বলেন, এ বিষয়ে মৌখিক বা লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




মন্তব্য করুন