শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জানালা দিয়ে এসিড ছুড়ে ঝলসে দিলো গার্মেন্টস কর্মীকে

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
২৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৩৩ |আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:১২
এসিডে দগ্ধ সাথী আক্তার
এসিডে দগ্ধ সাথী আক্তার

দুর্বৃত্তের ছুড়ে দেওয়া এসিডে হাত, মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার সাথী আক্তার (১৯) নামে এক গার্মেন্টস কর্মীর।

মাঝরাতে ঘরের ভাঙা জানালা দিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে দাহ্য পদার্থ ছুড়ে মুহূর্তেই ঝলসে দেয় সারাশরীর। সাথী আক্তার এখন মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। সময়ের সাথে সাথে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হচ্ছে। চোখের সামনে মেয়েকে ধুঁকে-ধুঁকে কষ্ট করতে দেখে বাবা-মায়ের কান্না যেন থামছেই না। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) মধ্যরাত সোয়া ২টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় সাথীকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের স্বজনেরা।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কাটাখালী-ফেরাজীপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের মেয়ে সাথী আক্তার।

প্রতিদিনের মতো মা আর ছোট বোনের সঙ্গে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন সাথী। তাকে দাহ্য পদার্থ ছুঁড়লে মুহূর্তেই তার মুখমন্ডল আগুনে ঝলসে যায়। পাশে থাকা তার মা এবং ছোট বোনের হাত এবং মুখের নানা অংশে ঝলসে যায়।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাথী আক্তারের মা জুলেখা বেগম বলেন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে নাঈমের সঙ্গে দুই বছর আগে বিয়ে হয় সাথীর। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য সাথীকে চাপ দিয়ে অত্যাচার শুরু করে নাঈম। মেয়ের জামাই একজন বখাটে ও নেশাখোর হওয়ায় তাদের বিচ্ছেদ হয়।

এরপর থেকেই রাস্তাঘাটে মেয়েকে বিরক্ত করতে শুরু করে নাঈম। তার সঙ্গে সংসার না করলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় নাঈম। এর জের ধরেই শুক্রবার মধ্যরাতে ঘরের ভাঙা জানালা দিয়ে তার মেয়ের মুখে এসিড মেরে হাত-মুখ ঝলছে দেয় নাঈম। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

সাথীর বড় ভাই সোহেল হোসেন বলেন, তার বোন ধামরাই উপজেলার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। অফিসে যাওয়া আসার সময় রাস্তা-ঘাটের বিভিন্ন জায়গায় তাকে বিরক্ত করে নাঈম। পুনরায় তাকে বিয়ে করে সংসার করার জন্য চাপ দিতে থাকে। তার এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শুক্রবার মধ্যরাতে নাঈম এসিড দিয়ে সাথীর হাত ও মুখ ঝলছে দেয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সাথীর বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের আাবাসিক চিকিৎসক কাজী একেএম রাসেল বলেন, দাহ্য পদার্থে সাথীর হাত-মুখ ঝলসে গেছে। তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখানে তার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।



মন্তব্য করুন