সার্চ কমিটিকে ‘খাস কমিটি’ বলল বিএনপি
সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি : সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য গঠিত সার্চ কমিটিকে আওয়ামী লীগের ‘খাস কমিটি’ বলে অভিহিত করেছে বিএনপি। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আমরা মনে করি এই অনুসন্ধান কমিটির দ্বারা মনোনীত নির্বাচন কমিশন হবে একান্তভাবে সরকারের আস্থাভাজন। এগুলো দিয়ে জনগণের সঙ্গে নাটক, প্রহসন-প্রতারণা, রঙ-তামাশা চলছে।’
বিএনপি মুখপাত্র বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নয়, জনগণের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। তাই সরকারকে বলবো- এই মুহূর্তে পদত্যাগ করুন। দেশকে ভয়ানক গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবেন না।’
সার্চ কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া সদস্যদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী বাকশালী চেতনার দ্বারা উদ্বুদ্ধ ও মুজিবকোট পরা লোকেরাই সরকারের সার্চ কমিটিতে থাকবেন। সেই সার্চ কমিটি হারিকেন দিয়ে খুঁজে খুঁজে মুজিবকোট পরা লোকদের বের করে আনবে।’
রিজভী বলেন, “নবগঠিত এই সার্চ কমিটি সেই অনুমানেরই নিরেট বাস্তবতা। এটাকে সার্চ কমিটি না বলে বরং ‘আওয়ামী খাস কমিটি বলাটাই যুক্তিযুক্ত মনে করি। এরা ভূপেন হাজারিকার সেই গানের মতো- ‘মোরা যাত্রী একই তরণীর’। এরা একই ঝাঁকের কৈ।”
তিনি বলেন, “এরা আওয়ামী লীগের কে কোন পজিশনে ছিলেন, আছেন তা নিয়ে দেশের সচেতন জনগণের মধ্যে চলছে যে আলোচনা চলছে তা এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ তে পরিণত হয়েছে।’
বিএনপি মুখপাত্র বলেন, ‘পরীক্ষিত আওয়ামী লীগ পরিবার দ্বারা আরেকটি নীলনকশার ভোট ডাকাতির নির্বাচন কমিশন গঠন করতে নিখাদ আওয়ামী লীগের চেতনার মানুষদের অনুসন্ধান করাই এই সার্চ কমিটির অভীষ্ট লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সার্চ কমিটির প্রধান আগের দুটি সার্চ কমিটিরও সদস্য ছিলেন। সার্চ কমিটির প্রধান ওবায়দুল হাসান ও তার পরিবার পরীক্ষিত আওয়ামী লীগার। তিনিও আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থী ছিলেন। তার পরিচয় তিনি বাকশাল ছাত্রলীগের বড় নেতা ছিলেন। এদের সুপারিশেই নিয়োগ পেয়েছিলেন রকিব ও হুদা কমিশন। এরা নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির নির্বাচন জাতিকে উপহার দিয়েছিলেন।’
রিজভী বলেন, ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আরেক বিশেষজ্ঞ, এই সার্চ কমিটির সদস্য হয়েছেন; সাবেক বহু বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন। ২০১৮ সালে সিলেট-১ (সিলেট সদর ও সিটি করপোরেশন) আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘রাজবাড়ী শহরের ভবানীপুর এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম হামিজ উদ্দিন শেখের পুত্র কুদ্দুস জামান। এই কুদ্দুস জামান এই সার্চ কমিটির সদস্য। তার ভাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা।’
‘আরেক সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক জন্মান্ধ আওয়ামী লীগার হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের একান্ত অনুরাগী ও দৃঢ় সমর্থক প্রয়াত লেখক সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী তিনি। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরোটা সময় পাকিস্তান বিমান বাহিনীর মেডিকেল সেন্টারে চাকরি করেছেন’ যোগ করেন বিএনপির এ নেতা।
মন্তব্য করুন